All language subtitles for Kaatera BSUB by SUDIP

মুভি : কাটেরা
ভাষা : কানাড়া
রানটাইম : ০২:৫০:৪৬

ভাবানুবাদ ও সম্পাদনা :
সুদীপ চক্রবর্তী।

ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয় না।

কিন্তু, ঠিক কী ঘটেছিল,
তা জানতে,

প্রমাণের প্রয়োজন।

আমি দুঃখিত, ম্যাডাম।

স্যার, এটা একটা বোল্ডার।

পেয়েছি, ম্যাডাম।
আমরা বোল্ডার অব্দি পৌঁছেছি।

ঠিক আছে।

চূড়ান্ত গণনা করো।

ঠিক আছে, ম্যাডাম।

কবে জানলেন যে এখানে মানুষের
কঙ্কাল পুঁতে রাখা হয়েছে?

খাল নির্মাণের কাজ চলছিল।

শ্রমিকরা আশেপাশে
কয়েকটি কঙ্কাল খুঁজে পেয়েছিল।

কৌতূহলের বশবর্তী হয়ে,
যখন তারা খনন শুরু করে...

তারা আরো কঙ্কাল খুঁজে
পেতে শুরু করে!

হতভম্ব হয়ে,

তারা কাসাবা থানায় খবর দেয়।

তারা আমাদের জানানোর পর...

আমরা ফরেনসিক
বিভাগ নিয়ে আসি।

এবং এই জমির নিয়ন্ত্রণ নিই।

এখন তদন্ত শুরু হয়েছে।

আপনারা এখনও পর্যন্ত কয়টি
কঙ্কাল পেয়েছেন?

এখানে ঠিক কি ঘটেছে,
আমাদের বলতে পারেন?

ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাদের
চাপ দিচ্ছে, ম্যাডাম।

অন্তত, অনুমান করে বলুন,
এখনো পর্যন্ত কত কঙ্কাল পাওয়া গেছে।

আমরা পুলিশ নই যে,

কিছু বানিয়ে বলবো।

আমরা ফরেনসিক বিভাগ
থেকে এসেছি।

আমরা শুধুমাত্র নিশ্চিতকরণ
করতে পারি।

আপনি গত তিন দিন ধরে
নিশ্চিত করছেন।

চূড়ান্ত গণনা।

ম্যাডাম, গননায় কি বেরুলো?

২০ জন?

৩০ জন?

আমার কর্মজীবনে,
এই প্রথম, এক জায়গায়...

এতগুলো কঙ্কাল খুঁজে পেলাম।

৫০ জন?

১০৭ জন।

একটি হীরার মূল্য!

কেবল বিক্রেতাই জানে।

এবং এটির শক্তি...

শুধুমাত্র কর্তনকারীই জানে।

যাই হোক না কেন,

সে যেন কোনোভাবেই এই বছর
মেলায় অংশ নিতে না পারে।

এটা যথেষ্ট না হলে
আমাকে জানাও।

আমি যে কোনোভাবে
ব্যবস্থা করবো।

ঠিক আছে।

আমার কান সোনার কামনা
করে না।

এটি ভালো খবর শোনার
অপেক্ষায় আছে।

ঈশ্বর তোমার সাথে থাকুন।

দুর্ভিক্ষের সময়,

আকাশের দিকে তাকিয়ে,

আমরা বৃষ্টি আসার জন্য
অপেক্ষা করি।

একইভাবে, আমরা তার জন্য
অপেক্ষা করছি।

কোনোভাবে তাকে মেলায়
আনার চেষ্টা করুন।

কি হয়েছে?

স্যার, আপনার সাথে কথা
বলা দরকার।

দাঁড়াও, আগে তাকে দেখা দরকার।

তাকে পরীক্ষা করতে দাও।

থাকুক, স্যার।

সে আমার বন্ধু।

সে তাড়াহুড়ো করছে কেন?

আমরা আপনার অফিসে গেছিলাম।

আদালতে গেছি।

আপনার বাড়িতে গেছি।

আমরা আপনার সাথে যোগাযোগ
করার সবরকম চেষ্টা করেছি।

কিন্তু আপনার লোকেরা দেখা করার
অনুমতি দেয়নি, স্যার।

আর কোন উপায় খুজে না,

আমরা এটা করতে বাধ্য হয়েছি।

তোমার কি মাথা খারাপ হয়েছে?

যদি কিছু হত,

এই যুবক প্রাণ হারাতো!

আমাদের শহরটাকে বাঁচানোর জন্য,

রাস্তার কুকুরের মতো আপনার
গাড়ির নিচে মরতে রাজি আছি।

পনেরো বছর ধরে,

আমরা নরকে বাস করছি।

গত তিন বছর ধরে মেলায়
তাকে আনতে পারিনি।

দুইজন আইনজীবী তাকে মেলায়
আনতে ব্যর্থ হয়েছেন।

আমি শুনেছি, আপনি নিজের
পেশায় অত্যন্ত সুনামের অধিকারী ।

কোনোভাবে তাকে মুক্ত
করুন, স্যার।

সারাজীবন আপনার কাছে
ঋণী থাকবো।

আপনার ফি নিয়েই এসেছি।

পুরো শহর,

তাকে দেখার জন্য অধীর
আগ্রহে অপেক্ষা করছে।

কিভাবে জানি না,

কিন্তু, তাকে মেলায়
উপস্থিত করান, স্যার।

আপনার কাছে
ভিক্ষা চাইছি, স্যার।

শোনো,

নিজেদের মৃত্যুর ভয় না করে,

তোমরা সবাই তাকে বার করার
জন্য লড়াই করছো।

লোকটি কে?

তোমার কে হয়?

তিনি আমাদের ঈশ্বর।

জেলা অফিসারের বক্তব্যের
ভিত্তিতে এবং

অভিযুক্তের আচরণ বিবেচনা করে,

আদালত ১০ দিনের প্যারোল
মঞ্জুর করেছেন।

দশ দিনের এই
প্যারোলের জন্য,

অভিযুক্তের সঙ্গে একজন
কনস্টেবল মোতায়েন করা উচিত।

সে যে জেলে আছে, সেখানে আরো
একটা তালা লাগাতে তোমাকে বলি নি।

বলেছিলাম, যে তালাটা আছে,
সেটা যেন কোনোভাবেই না খোলে।

সে আইনকে অতিক্রম
করতে পারে।

কিন্তু যেন আমার
কাছে না আসে।

মল্লনকেরের মাটিতে পা রাখার
আগেই তার বিনাশ ঘটা উচিত।

তার সাথে মেলা দেখতে
যাবো কেন?

একমাত্র আমিই কি এই
স্টেশনে উপলব্ধ আছি?

দয়া করে অন্য কাউকে নিয়োগ করুন।

তুমি একটি শৃঙ্খলাবদ্ধ
বাহিনীর অংশ।

আদেশ মা পাবে, মান্য করো।

আমার স্ত্রী দুই সপ্তাহের মধ্যে
প্রসবের আশা করছেন।

তাই আমার দশ দিনের
পিতৃত্বকালীন ছুটি দরকার।

লোকবলের অভাবে
আমরা হিমশিম খাচ্ছি।

কিন্তু তুমি?

পরপর ছুটি নিয়ে তুমি
মজার সময় কাটাচ্ছো!

একটি রাইফেল এবং এক রাউন্ড গুলি নিয়ে আগামীকাল সকালে চলে যাও।

স্যার, মানে...

শহরে যাবার একটা
মাত্র বাস আছে।

সেটায় চড়ে চলে যাও।

তিনি কি আদৌ সন্তানের পিতা?

বাস খালি।
ভিতরে এসো।

তোমরা সবাই টিকিট কেটেছো।
ভিতরে ঢুকছো না কেন ?

আমি তোমাদের সাথে আছি।
যাওয়া যাক।

তার হাতে হাতকড়ি লাগানো।।

মাথা নিচু করে বসে আছে।

একটা বুড়ো!
ভাবছি, সে কি অপরাধ করেছে!

চিন্তার কিছুই নেই।
চলো, যাই।

আমি বলতে চাইছি...

শোনো, কন্ডাক্টর।

এভাবে দরজা আটকে রাখলে
যাত্রীরা প্রবেশ করবে কিভাবে?

স্যার,

সবাই আতঙ্কিত!
কেউ আসতে রাজি নয়।

হ্যাঁ, স্যার। আমরা ভীত।
- আমরা চড়ছি না।

তার হাত বাঁধা।

রাইফেলটা হাতে আমি
তার পাশে বসে থাকবো।

কোনোভাবেই নয়।

আমাদের টাকা ফেরত দাও।
আমরা চলে যাবো।

অনুরোধ করছি, দয়া করে তাকে
বাস থেকে বের করুন।

জনগণের সহযোগিতা ছাড়া কিভাবে আমার দায়িত্ব পালন করতে পারি?

নিচে নামো, ভাই।

জনসাধারণ আতঙ্কিত।
চল, যাওয়া যাক।

ভিতরে যাও।
তাড়াতাড়ি।

তুমি কি তোমার
টিকিট কেটেছো?

জনগণ এগিয়ে যেতে রাজি থাকলে,
আমরা পিছিয়ে যেতে প্রস্তুত।

একটি মাত্র বাস পাওয়া যায়।

কি করবো এখন?

তামিলনাড়ুতে কাবেরী নদীর
জল ছাড়ার কাজ স্থগিত হয়েছে।

ভারী বৃষ্টিপাত হলে,
সব সমস্যা মিটে যাবে।

মাইসোরে মাধুরী!

"দিল" সিনেমার শুটিংয়ের সময়
অনেকে পদদলিত হন।

সেখানে থাকলে, মাধুরীকে কাছ
থেকে দেখতে পেতাম!

পরিবর্তে, এই অপরাধীকে দেখাশোনা করার দায়িত্ব তারা আমাকে দিয়েছে।

সম্প্রতি পাওয়া ১০৭টি কঙ্কালের
ঘটনায় ফরেনসিক বিভাগ তদন্ত করছে!

ভাঁড় ভাঙো,
টাকা পাবে।

মাটি খুঁড়লে,
কঙ্কাল পাবে।

তারা যুদ্ধে মারা যেতে পারে।

অথবা কোনো বিধ্বংসী
রোগের কারণে।

এটাকেও খবর বলে চালাচ্ছে!

এই! সরাসরি স্বর্গে নিয়ে
যাচ্ছো নাকি?

কি জঘণ্য অবস্থা!

কেউ রাস্তা অবরোধ করেছে।

রাস্তা পরিষ্কার করতে
আমাকে সাহায্য করো।

তার খোঁজ কর।
- তুই ওদিকে দেখ।

কনস্টেবলের সাথে
একজন বন্দী ছিল।

কোথায় সে?

চল, যাই।
- যাওয়া যাক।

ওই লোকগুলো কারা?

অস্ত্র নিয়ে আমাদের তাড়া করছে!

মেলায় যাচ্ছি?

নাকি আমাদের শেষকৃত্যে যাচ্ছি?

তাদের সম্পর্কে ভুলে যাও।
আমাকে বলো, তুমি কে?

আমি তোমার নাম দেখি নি।

শুধুমাত্র নম্বর চেক করেছি।

তোমাকে এখান পর্যন্ত
নিয়ে এসেছি।

তোমার নাম কি?

নাম বলো, বুড়ো।

আমার নাম...

আমি ভীমনহল্লি থেকে এসেছি।

আমাদের নিজস্ব চুল্লি ছিল।

পার্শ্ববর্তী শহরের মানুষ,

আমার চুল্লিতে আসত।

চাষের জন্য লাঙ্গল,

কাঠ কাটার জন্য কুড়াল,

ফসল কাটার জন্য দা,

কাস্তে, রেক, কোদাল, ট্রোয়েল,

আমি সব যন্ত্র বানাতাম।

সবজি কাটার ছুরি থেকে...

ধারালো তলোয়ার।

আমার চুল্লিতে ধাতু গলে যেতো।

আমার হাতের হাতুড়ি তাদের
পিটিয়ে সিধা করতো।

আমি আমার চুল্লিকে মন্দির
এবং কারিগরি দক্ষতাকে ঈশ্বর...

বলে বিশ্বাস করতাম।

ঈশ্বরের উপহার ছিল...

আমার বেলিকে কেউ মেরে ফেলেছে!

এটা নিশ্চয়ই রঙ্গপ্পা বা
তার দলের লোকদের কাজ।

পাগল হয়ে গেছিস নাকি, কাটেরা?

আমাকে সন্দেহ করার মত
কোনো শক্তিশালী প্রমাণ আছে কি?

আমি নিজের হাতে
এটা তৈরি করেছি।

এটা আমার সাথে
কথা বলে।

গত বছরের ফসলের জন্য,

আমি এটার সাথে চারটি
দা তৈরি করেছিলাম।

মনে আছে?

তুই বলেছিলিস, গতকাল তার সাথে
তোর ঝগড়া হয়েছিল।

এখন এই পাপ করেছিস!
ঈশ তোকে নরকে পাঠান।

যেকোনো জায়গায় যত দা-ই
তৈরী হোক না কেন,

আমার প্রস্তুত করা অস্ত্র আমি
সবসময় সনাক্ত করতে সক্ষম।

হস্তরেখাবিদরা যেমন হাত
পড়তে পারেন,

তেমনভাবেই আমি কাটারি পড়তে
এবং তার প্রেক্ষাপট বলতে পারি।

ঈশ্বর আমাকে শক্তি এবং প্রখর স্মৃতি
ক্ষমতা দিয়ে আশীর্বাদ করেছেন।

সকল রাজার রাজা।
মহান রাজা,

দৈত্যদের দ্বারা পূজিত,

অসাধারণ ক্ষমতার অধিকারী,
হাজার তারার চেয়েও উজ্জ্বল,

সাহসী হৃদয়,

সর্বশক্তিমান হিরণ্য কাশ্যপকে
প্রনাম জানাই।

ওস্তাদ।

কোন বয়সের বৈষম্য ছাড়াই,

সব বয়সের শিল্পীদের প্রতি
সমান আচরণ করা উচিত।

নাটকে অভিনয় করতে চাইছিল বলে
আপনি চাঙ্গাকে অপমান করেছেন।

এটা কি ন্যায্য?

কথা বলছি দেখতে পাচ্ছো না?

কোন ভূমিকা না থাকলে,
ঠিক আছে।

কিন্তু আপনি তাকে বলেছেন,
কোন চরিত্র দেবেন না!

এটা কি ন্যায্য?

কাটেরা, দয়া করে
আমার কথা শোনো।

আত্মীয়স্বজন এবং পরিবারের
সদস্যদের যদি রোল দিতে থাকেন,

তাহলে, চাংলুর মত প্রতিভা
কি করবে?

সে বোবা এবং জিজ্ঞাসা করতে
অক্ষম বলে, এই কাজ করবেন!

দেখি, আপনি নাটকটি
কিভাবে সম্পাদন করেন।

কি হয়েছে রে শালা?

কথা বল!

গলা শুনলাম!

কিছু না, জামাইবাবু।

আমাদের চাংলু অভিনয়
করতে চায়।

তাই পরিচালকের কাছে একটি
চরিত্রের জন্য অনুরোধ করছিলাম।

শোন,

যদি কেউ অভিনয় করতে না জানে,
তাকে অভিনয় শেখানো যেতে পারে।

তাকে বলতেও শেখানো যায়।

কিন্তু সে কথা বলতে পারে না।

কিভাবে তাকে
কথা বলা শেখাবো?

ওস্তাদ, আপনি তাকে চেনেন না।

তিনি অভিনয়ে আপনাদের
সবাইকে হারাতে পারেন।

তোমার অভিনয় দক্ষতা দেখাও।

চুপ করো।

সে কি বললো?
তুমি কী বুঝলে?

জামাইবাবু,

যদি তাকে অন্তত
একটি সাধারণ চরিত্র দেন,

সে মঞ্চে একটি বর্শা ধরে
থাকলেও খুশি হবে।

তিনি হিরণ্য কাশ্যপের চরিত্র
করতে চাইছেন।

জামাইবাবু!

আমাকে অপমান করার
জন্য এই বোবাকে নিয়ে এসেছো।

এখন আমার ভূমিকা ছিনিয়ে
নিতে চাইছো?

সেরকম কিছুই না।
চলো, যাওয়া যাক।

কোন গাধা স্বেচ্ছায় নিজের
জীবনের ঝুঁকি নিতে চায়?

দয়া করে আমাকে
ক্ষমা কোরো।

চলো পালিয়ে যাই,
তাড়াতাড়ি।

আজ সন্ধ্যায় নাটক,
বাড়িতে দেখতে পাবো।

চলো যাই।

ওহ, আমার প্রিয় সন্তান!

ভেবেছিলাম তোর জন্মের পর
আমার জীবন আরও ভালো হবে।

তুই বড় হয়ে গেলেও,
জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।

তোর বাবা আমার
সর্বস্ব নিয়ে গেছে।

ভাবছি, ভবিষ্যতে আমার এই
দুর্বিষহ জীবন কেমন হবে!

দশাইয়াহ ! দশাইয়াহ !

আগামীকাল সকালে
আমার বাড়িতে আসবেন।

আপনাকে ভিক্ষা দেবো।

দয়া করে আমার সন্তানকে
এখন আশীর্বাদ করুন।

সে দীর্ঘজীবী হোক!

মা?

মা?

মা?

মা?

মা?

সে কখনোই বদলাবে না।

তোমার জামাই আমাকে আবার ঘর
থেকে বের করে দিয়েছে।

দয়া করে কান্না থামা,
অনুরোধ করছি।

সে আমাকে নির্দয়ভাবে
বের করে দিয়েছে!

আমি কার পক্ষ নেবো?
আমার স্বামীর?

নাকি আমার ভাইয়ের?

এটা কিসের তরকারি?

শস্যের তরকারি।

আমাকে একটু দাও।

দেখ,

যদি তোর জামাইবাবু আমাকে
দূরে সরিয়ে দেয়,

আমি ওই বটগাছে ঝুলে মরবো।

আমার স্বামীকে ছাড়া
এক মুহূর্ত বাঁচতে পারবো না।

তোকে অনুরোধ করছি!
চুপ কর, দিদি।

কিভাবে করবো?

তোর জামাইবাবু বাংলার ছোলার
দোসা পছন্দ করে।

ভিজানোর জন্য রেখেছিলাম।

খুব সকালে আমার স্বামীর বাড়িতে
ফিরতেই হবে।

কিভাবে, জানি না!
কিন্তু এটা ঠিক করতে হবে।

আর এখন মোরগ লড়াই
শুরু হবে!

আমার আত্মসম্মান ছেড়ে
তোমার কাছে এসেছি।

ছেড়ে এসেছিস কেন?

তোর সাথে আসতে
রাজি হলো না?

আমার সাথে মজা কোরো না।

পুরুষদের মধ্যে বিভিন্ন
সমস্যা হতে পারে।

কিন্তু তার মধ্যে নারীদের
টেনে আনা উচিৎ নয়।

হ্যাঁ, আমি তার মধ্যে মহিলাদের
টেনে নিয়ে আসি।

পশুদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য
রিঙ মাস্টারের চাবুকের প্রয়োজন হয়।

একইভাবে, তোকে বশ করার জন্য
আমার তোর দিদিকে দরকার।

তুচ্ছ কারণে তুমি
দিদিকে বাড়িতে পাঠিয়ে দাও!

কিন্তু সে জিনিসটা ফুলিয়ে শহরের
আলোচ্য বিষয় করে তোলে।

আসলেই!
সে এই ব্যাপারে দুর্দান্ত।

যদিও সে তার সংসার
ঠিকমতো চালাতে পারে না,

কিন্তু এই কূটনীতিগুলো খুব
বুদ্ধিমতীর মত করে।

মানুষ জড়ো হচ্ছে।

আয়, ভিতরে গিয়ে
আলোচনা করি।

হ্যাঁ... চাংলু!

তোর পানীয় উপভোগ কর।

মদের প্রভাবে তোর স্নায়ুতন্ত্র জেগে
উঠবে আর তুই কথা বলবি।

উহু! জামাইবাবু!

তাহলে, এই কারণেই...

দিদিকে ঘর থেকে
বের করে দিয়েছো?

সে আমাকে কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছে,
আমার ছেলের সামনে পান করবেন না।

ছোটবেলা থেকে সে এমনই।

সে আমাদের বাবাকেও
রেহাই দেয়নি।

তাকেও পান করতে নিষেধ করেছিল,
যাতে তার ভাই নষ্ট না হয়।

তোর প্রতি তার অপরিমেয়
ভালবাসা এবং যত্ন আছে!

আমরা ১৬ বছর ধরে বিবাহিত।

কিন্তু গর্ভাবস্থার কোন চিহ্ন ছিল না।

সে তিনবার গর্ভপাতের
শিকার হয়।

আমি যখন তাকে সান্ত্বনা
দেওয়ার চেষ্টা করলাম,

সে বললো, "আমার ভাই
আমার ছেলের মতো।"

"যখন সে তার সাথে থাকে
তখন আমি কোন সন্তান চাই না।"

সে উল্টে আমাকে সান্ত্বনা দিল।

পরে আমরা আশীর্বাদস্বরূপ
এই সন্তান লাভ করেছি।

আমাদের জন্য,

তুই আমাদের বড় ছেলে।

এটা আমার শহর।

এই লোকেরাই আমার পরিবার।

শহরের সবাই,

'কাজই পূজা'-
এই মতবাদে বিশ্বাসী।

তারা সবাই আনন্দ ও বেদনা
ভাগ করে নিত।

এবং সম্প্রীতির সাথে
বসবাস করতো।

কিন্তু...

আমার কথা সবাই শোনো।

এই শুভ মরশুমে
একটি সুখবর রয়েছে।

প্রতি বছরের মতই,

শহরের প্রধানের কাছে আপনাকে
এই এই বছরের কর দিতে হবে।

যিনি আপনাকে জমি দিয়েছেন,

সেই মালিকের সাথে ফলনের
একটি অংশ ভাগ করতে ভুলবেন না।

আগামীকাল সবাইকে
পন্য নিয়ে মালিকের বাড়িতে,

উপস্থিত থাকতে হবে।

এই আদেশ স্বয়ং মালিক দিয়েছেন।

সবাই আমার কথা শুনুন।

নানজুন্দা?
- ৮ একর, স্যার।

৮০ ব্যাগ।

হ্যাঁ, স্যার।

সিদ্ধান্ন?

৩ একর
৩০ ব্যাগ, স্যার।

সংক্রান্তির সময় তোমার নেওয়া
ঋণের কি হবে?

ব্যাপারটা হলো...

ভেবেছিলে আমাদের মনে নেই..

আমাদের বোকা বানানোর
পরিকল্পনা করছো?

আমি কঠিন সময়ের
মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি,

তাই আমি পরের বার
এটা শোধ করার কথা ভাবছি।

প্রতি বছর নিজের পাওনা
পরিশোধ করা উচিৎ।

রাঙ্গা?
- হ্যাঁ ভাই।

তার কাছ থেকে আরও দুটি ব্যাগ সংগ্রহ কর।
- ঠিক আছে, ভাই।

হুলাগাপ্পা, ১ একর,
১০ ব্যাগ।

পোকামাকড়ের দ্বারা
ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

যদিও পুরো বছর আমি মাঠে কঠোর পরিশ্রম করেছি,

আমার এবং আমার পরিবারের
অতি সামান্যই ফসল আছে।

এই বছর শুধুমাত্র ৫ ব্যাগ
গ্রহণ করুন।

তুমি সততার প্রতীক।

তুমি শুধুমাত্র সেইটুকুই ফলিয়েছো,
যতটুকু আমাদের প্রয়োজন।

সব ব্যাগ খোল।

তাদের সব ব্যাগ নিয়ে নে।

দয়া করে এটা করবেন না।

সারাবছর রক্ত ও ঘাম ঝরিয়ে,

আমরাই মাঠে কাজ করি।

আপনারা কোনো কষ্ট করেন না।

আমাদের এক টুকরো
জমি দিয়ে...

আমাদের কাছ থেকে পণ্য
ছিনতাই করছেন।

আপনারা গরীবদের শোষণ করছেন।

ভুলে যাবেন না,
ঈশ্বর দেখছেন।

আমার প্রভু!
আমার প্রভু!

আমাদের সব কিছু
কেড়ে নেবেন না।

অনুগ্রহ করে আমাদের
বেঁচে থাকার জন্য কিছু দিন।

আমি তোদের নৌকা দিই।

জাল দিই।

খাবার দিই।

এবং মাছ ধরতে
সমুদ্রে পাঠাই।

তিনদিন পর ফিরে,

যদি বলিস যে, যে মাছ ধরেছিস, তার
তোর পরিবারের পক্ষে যথেষ্ট নয়!

সারাদিন কাজ করলে,
একবেলা খাবার পাই।

তবুও, আপনি আশা করেন যে,
আমরা আপনাকে সব দিয়ে দেবো।

আমার পরিবারের সদস্যরা
না খেয়ে মরবে, হুজুর!

আমি আপনাকে অনুরোধ করছি!

আমি আপনাকেকে দশটা ব্যাগ দিতে পারবো না! আমি সত্যিই পারবো না।

একর প্রতি ১০ ব্যাগ দিতে
অসুবিধা হচ্ছে, তাই না?

ঠিক আছে।

অতঃপর,
একর প্রতি...

অতঃপর,
একর প্রতি...

বারোটি ব্যাগ দাও।

মালিক,

তার ভুলের জন্য
আমাদের শাস্তি দিচ্ছেন কেন?

সে যখন ফালতু বকছিল,

তোমরা সবাই চুপ করে ছিলে।

সবাই চুপ করে ছিলে।

তার মানে,
তোমরা সবাই এতে একমত ছিলে।

এই, মারা?
- হ্যাঁ, মালিক।

চুক্তিতে প্রতি একর
বারোটি ব্যাগ উল্লেখ করো।

এবং তাদের বুড়ো আঙুলের
ছাপ নাও।

তারা চাইলে কাজ করুক,

নয়তো, ছেড়ে দিক।

এরা সবাই সাপের মত,

বিষহীন হলে তাদের গর্তে ছাড়ো,

বিষাক্ত হলে বনে ছেড়ে দাও।

ভীমনহল্লিতে, তারা একটি
নতুন আইন পাস করেছে যে

কৃষকদের কর হিসাবে একর প্রতি
১২ ব্যাগ ফসল দিতে হবে।

দেবরায় সম্ভাব্য সব উপায়ে
আমার সাথে প্রতিযোগীতা করছে।

সে আমার মুখ থেকে
শব্দ চুরি করেছে।

বাবা, আমি কলেজে যাচ্ছি।

ঠিক আছে, সোনা।

সাবধানে যাস।

আমি আসছি।

শানভোগ,

এখনো মেয়েকে পড়াচ্ছো কেন?

তোমার পেশা চালিয়ে যেতে,

তোমার ছেলে আছে।

সে পড়াশোনায় মেধাবী।
পড়াশুনা চালিয়ে যাক।

নিজের সন্তানদের বদলে অধস্তন
লোকেদের শিক্ষা দিয়ে লাভ কি?

এই, পাপী!

আবার চান করছো কেন?

বাবা গোগ্রাসা দিচ্ছিলাম।

আমার উপর
করিয়ার ছায়া পড়লো।

সেজন্য নিজেকে পবিত্র করছি।

এখনি জবাব দাও।

আমাকে বিয়ে করবে?

নাকি তোমার গলা
কেটে ফেলবো?

কাটারিটা ভোঁতা হয়ে গেছে।

হাতলটাও আলগা।

যদি এটা ঠিক করো,

আবার ধারালো হয়ে যাবে।

এটাকে ধার দেবো কি?

আমি আমার সম্পর্কে
জিজ্ঞাসা করছি।

কিন্তু সে কাটারি নিয়ে
কথা বলছে।

ওহ ঈশ্বর!

মানুষ ফুল দিয়ে
তাদের ভালোবাসা প্রকাশ করে।

কিন্তু তুমি গলায় ছরি ধরে তোমার ভালবাসা প্রকাশ করছো?

আমার কাছে আর কি চাও?

এত বছর ধরে,

পৃথিবী যেমন সূর্যের চারদিকে ঘোরে,
আমিও তার পিছনে ঘুরছি।

হয়তো কোনো ভালো দিনে
আমি ভূমিকম্প হয়ে যাবো!

কিছুই তোমাকে প্রভাবিত
করবে না।

তুমি প্রতিদিন উঠবে ও অস্ত্র যাবে।।

তুমি পৃথিবী নও,

জমিদারের মেয়ে!

এবার যাও।
তোমার দেরি হয়ে যাচ্ছে।

একটা কথা বলবো?

একশো একটা কথা বলো, দিদি।

তোমাকে কে আটকাচ্ছে?

পুত্রাজু।

দাদা?

তুই একদম পুঁচকে,

আমি তোকে চুল্লিতে গলিয়ে দিলে,
বেশ বড় হয়ে যাবি!

এত রাগ কোরো না।

ধাতু নিয়ে কাজ করতে করতে,
তোমার হৃদয়ও ধাতুতে পরিণত হয়েছে।

এটা নাও।

এটা কি?

সঙ্গীত এবং ছন্দের বৃষ্টি আনার
ক্ষমতা আছে।

তারা কি ভালোবাসা জাগাবে না?

সঙ্গীত, ছন্দ, সুর ও কথা

এই সব হয়তো তোমার হৃদয়ে
ভালবাসা জাগাতে পারে।

অবসর সময়ে এটা শুনো।

না! না! না!

অবসর সময় তৈরি করো
এবং এটা শোনো।

অবশ্যই আমি করবো।

তোমাকে কেটে পড়ার জন্য
কি দিতে হবে?

একটা চুমু।

বদমাইশ!

ভাবানুবাদ ও সম্পাদনা :
সুদীপ চক্রবর্তী।

বাসভাইয়াহ?

মহালিঙ্গিয়াহ?

কালাইয়া?

সরকারের দেওয়া বিনামূল্যের সার
আমরা বিক্রি করছি জানতে পেরে

যদি কেউ সমস্যার সৃষ্টি করে?

আমরা জিভ কাটি না।

আমরা গলা কেটে ফেলি।

বাসভরাজা?

কারিয়া, এদিকে আয়।

হ্যাঁ, স্যার।

এখানে আঙুলের ছাপ দে।

এসব কি, বাবা?
এটা কিন্তু ঠিক নয়।

তাদের শোষণ করছো, কারণ তোমাকে প্রশ্ন করার কেউ নেই।

সরকার বিনামূল্যে সার দিচ্ছে।

কিন্তু তুমি এটা টাকার জন্য
বিক্রি করছো।

শুধু এখানে নয়,
এটা সব জায়গায় ঘটছে।

ভীমনহল্লির দেবরায়,

একজন মানবহিতৈষীর
মতো গর্ব করছে!

যেন নিজের স্টোরেজ
থেকে এইসব দিচ্ছে।

যে কালেক্টরের তাদের জিজ্ঞাসাবাদ
করার কথা, সে হাততালি দিচ্ছে!

ধনীরা ক্ষুধার্ত মানুষের বেদনা
বুঝতে পারে না।

সরকার এটা উপলব্ধি করেছে।

এই কারণে,

গরীবদের খাবার দিতে,

সরকার এটা বিনামূল্যে দিচ্ছে।

কিন্তু তুমি তাদের
খাবার ছিনিয়ে নিচ্ছো!

এটা বেশিদিন চলবে না, বাবা।

একদিন তারা বিদ্রোহ করবে।

অপেক্ষা করো এবং দেখো।

তারা শুধুমাত্র দাস,

বিদ্রোহী সৈনিক হতে পারবে না।

যতক্ষণ জাতিভেদ প্রথার শৃঙ্খলে
বজায় থাকবে,

তারা দাস আর আমরা জমিদার
হয়েই থাকবো।

তারা শুধু আত্মাসহ জুতো মাত্র।

আমাদের যদি হাঁটতে হয়,

তাদের পায়ে চাপাতে হবে।

গত কয়েকদিন ধরে
কামারশালায় দুর্গন্ধ বেরোচ্ছিল।

ভেবেছিলাম, হয়তো
ইঁদুর পচার কারণে হয়েছে।

কিন্তু তুই সেই দুর্গন্ধময়।

কেন ঘন ঘন চান করিস না?

আমাদের কোনো উৎসব
বা মেলা নেই।

চান করতে হবে কেন?

আমরা পুরোহিতও নই।

বজ্জাত!

যেন শুধু তারাই মানুষ
আর আমরা নই!

দিদি, আমার সাথে চান
করতে যোগ দাও।

আমাকে মারছো কেন?

তুই তার পরিবর্তে আমাকে জিজ্ঞাসা
করেছিস বলে তার হিংসা হচ্ছে।

এটা নে।
তাড়াতাড়ি কর।

তোমাকে সদ্য স্নান করা দেবতা মহাদেবেশ্বরের মত দেখতে লাগছে।

তোমার সাইকেল তোমাকে
বইতে পারে না।

তোমার চড়বার জন্য
একটা বাঘ দরকার।

ঠিক আছে,
সরে দাঁড়াও।

ওহ, তোমার টায়ার
পাংচার হয়ে গেছে!

এটা নিশ্চয়ই তোমার কাজ।

এটা ঠিক নয়।
আমি কিছুই করিনি।

থামো।

ঠিক আছে,
একটা চুমু দাও।

আমি তোমাকে পৌঁছে দেবো।

দেখো, তোমার সাইকেলটা
বাঘ নয়।

বললাম, কেটে পড়ো।

আগে আমার কথা শোনো।

সরকার বিনামূল্যে সার দিচ্ছে।

জমিদার ও কালেক্টররা
হাত মিলিয়েছে।

তারা কৃষকদের কাছে
সেগুলো বিক্রি করছে।

কেউ কি তাদের
প্রশ্ন করবে না?

শহরে অভিজ্ঞ
মানুষরা আছেন।

তারা ঠিক জানেন,
কি করতে হবে।

আমি নিশ্চিত, এসব করার আগে
তারা ভালোভাবে চিন্তা করেছে।

কেন অহেতুক সমস্যা খুঁজছো?

উপেক্ষা করো।

তোমাকে নেতা মনে করে,
তোমার কাছে এলাম!

আমি খুব বোকা!

শেষ নিঃশ্বাস না ফেলা পর্যন্ত,
তারা তোমার উপর অত্যাচার করবে।

তুমি নির্যাতিত হও।

সিদ্দন্না?
- হ্যাঁ।

কাটেরার জন্য গরম
খাবার নিয়ে আয়।

ঠিক আছে, দাদা।

জামাইবাবু,

এটা কি সত্য যে, জমিদার
সার বিতরণ করছেন?

আজ সকালে বুড়ো আঙুলের
ছাপ নিয়ে এসেছি।

এই দেখ।

কিন্তু প্রভা বললো,

সরকার বিনামূল্যে সার দিচ্ছে।

মনে হয়, সে তোমার সাথে
মজা করছিল।

আমরা কি সরকারের আত্মীয়,
যে বিনামূল্যে সার দেবে?

আমি একমত,
যে সে খুব দুষ্টু।

কিন্তু সে এসব বিষয়ে
মিথ্যা বলে না।

সে উচ্চ শিক্ষিত।

সে আমাদের জন্য চিন্তা করে।

প্রকৃতপক্ষে.

মনে হয়, শানভোগ দারুণ হিসাব করে
তাকে জন্ম দিয়েছেন।

তার মুখ!

তার বক্ষ!

তার কোমর!

সবকিছু সঠিক অনুপাতে!

আমি যদি কাটেরার
জায়গায় থাকতাম,

লোহা দিয়ে জিনিস
বানাবার পরিবর্তে,

আমি তাকে বানাতাম।

প্রানহীন বোতলও হাওয়া না
থাকলে শব্দ করে।

ভাব, যদি তোর নোংরা মুখ
আমি বন্ধ করি,

তুই কত আওয়াজ করবি।

আমাদের শহরের বাসিন্দা বলে
তোকে এইবার ছেড়ে দিচ্ছি।।

নয়তো...

প্রকৃত মানুষের
কঠোর পরিশ্রম করা উচিৎ।

নোংরা ভাবা উচিত নয়।

স্যার,

ফসল কাটার জন্য
পঞ্চাশটি কাস্তে তৈরি করেছি।

একটি কাস্তে কম হলে
আমি টাকা দেবো না।

যদি তাই হয়,

আপনি দিলেও, আমি
সেই টাকা নেবো না।

আপনি আমাদের বিশ্বাস
নাও করতে পারেন।

কিন্তু আমি একজন সৎ মানুষ।

মহাদেবী, ঘোল নিয়ে আয়।

তুমি আসবে জানলে,

ঘোলের সাথে লেবুর রস
মিশিয়ে আসতাম।

এই নাও।

দাঁড়াও, আমাকে একটা
গ্লাস নিতে দাও।

পুরানো প্রবাদ বলে,

"যখন আপনি স্বেচ্ছায়
বিয়ের প্রস্তাব দেন,

বর অহংকারী হয়ে ওঠে।"

এটা নাও।

আমাকে দাও।
আমি তৃষ্ণার্ত।

মহাদেবী !

শুধুমাত্র এই পরিবারে জন্মগ্রহণ করার
কারণে আমরা উচ্চপদস্থ নই।

আমরা যে পোশাক পরি,

আমরা যে খাবার খাই,

আমরা যে ভাষা ব্যবহার করি,

সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য আমাদের উচ্চতর করেছে।

আমরা ভক্তি সহকারে পূজা করি

এবং পবিত্র নৈবেদ্য প্রদান করি।

তারা অ্যালকোহল পান করে
এবং জঘন্য খাবার খায়।

তোমার মেয়েকে বলো, আমাদের
মধ্যে বিশাল পার্থক্য আছে।

মালিক,

এটা তার দোষ নয়।

না জেনে,

বাচ্ছাটা ভুল করেছে।

আমি তাকে শিক্ষিত করব।

লোহা গরম থাকাকালীনই
আঘাত করতে হবে।

বাসভ?

হ্যাঁ, মালিক।

প্রথা ভঙ্গের জন্য তাকে
১০ ঘা চাবুক মারো।

হ্যাঁ, মালিক।

বাবা, অসহায় বাচ্ছাটার উপর
তোমার ক্ষমতা দেখিও না।

কুকুর অনুগত বলে, আমরা তাদের আমাদের থালায় খেতে দিই না।

পদ ঈশ্বর প্রদান করেছেন।

পদকে কিভাবে সম্মান করতে হয়,
তাদের অবশ্যই শেখাতে হবে।

আমার ভুল হয়েছে, যে নিষ্পাপ
ছেলেটির দিকে নজর রাখি না।

দয়া করে আমাকে শাস্তি দিন।

বাবা, না।

তুই ভিতরে যা।

ভিতরে যা।

আয়।

দয়া করে, মারবেন না।

থামুন।

দয়া করে, মারবেন না।

দয়া করে, মারবেন না।

দয়া করে, মারবেন না।

দয়া করে থামান, মালিক।

দয়া করে, মারবেন না।

বাসভ।

যজ্ঞ এবং হোম
আয়োজন করে,

ঈশ্বরকে খুশি করে আপনি সমাজে
আরো উচ্চতর হয়ে উঠুন।

যদি এই নিষ্পাপ ছেলেটির দোষ
ক্ষমা করতেন,

আপনি প্রকৃত
জ্ঞানীও হয়ে উঠতেন!

কাটে...

ভুলের জন্য
আমাকে চড় মারো।

কিন্তু চুপ করে থেকো না।

আমি অনুশোচনায় মরে যাচ্ছি।

অনেকবার বলেছি
কিন্তু তুমি কখনই বুঝতে পারো নি।

আশা করি, এবার তুমি আমাদের
মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পেরেছো ।

জাতি ও শ্রেণিবিন্যাস
তাদের দ্বারাই তৈরি হয়।

আমার দ্বারা নয়।

কিন্তু ভালোবাসা?

তুমি প্রেমে পড়েছো।

আমি জানতাম না,

যে আমার ভালবাসা
এই আগুনে ফুটে উঠবে।

আমি ভালোবাসায়
জাত বা সম্পদ দেখিনি।

শুধু একটা জিনিসই দেখেছি।

আমি তোমাকে দেখেছিলাম।

আমার আত্মা তোমার হয়ে গেছে।

যদি কখনো বিয়ে করি,

আমি শুধু তোমাকেই বিয়ে করবো।

যারা জল দিলেও
দূর থেকে দেয়,

তোমার মনে হয়,
তারা বিয়েতে মত দেবে?

প্রভা,

আমাদের জীবন
এই চুল্লিতে সীমাবদ্ধ।

এই মিথ্যার বাইরে,

তোমার আরামদায়ক জীবন।

তোমার আর আমার মাঝে,

জাত বলে একটা
আগ্নেয় সীমানা আছে।

আমি যদি এটা অতিক্রম
করার চেষ্টা করি,

তুমি পুড়ে ছাই হয়ে যাবে।

যারা কর্পূর জ্বালায়,

তাদের পক্ষে চুল্লির তাপ
বোঝা সম্ভব নয়।

চলে যাও।

দাদা, প্রভা!

তোমার সাথে থাকার জন্য,

আমি যে কোন কিছুর
মুখোমুখি হতে পারি!

যাই হোক না কেন,
আমি তোমার এবং শুধু তোমার।

আমি তোমার সাথে থাকবো,

এবং তোমার হয়েই মরবো।

ভাবানুবাদ ও সম্পাদনা :
সুদীপ চক্রবর্তী।

ম্যাডাম, রিপোর্ট দিলে
আমি যেতে পারি।

স্যার, আমাকে কঙ্কালগুলো বিস্তারিতভাবে বিশ্লেষণ করতে হবে।

আমার আরো সময় প্রয়োজন।

প্লিজ বসুন।

তদন্ত করার
কিছু নেই, ম্যাডাম।

একশো বছর আগে, প্লেগ বা
কলেরার কারণে মানুষ মারা যাচ্ছিল।

এই কঙ্কালগুলো সেইসব অসুস্থ
মানুষের মৃতদেহ।

না, স্যার।

আমাদের গবেষণা অনুযায়ী,
এটি এক যুগ আগে ঘটেছে।

কিছু তো গন্ডগোলের
ব্যাপার আছে।

রেকর্ড চেক করুন প্লিজ।
কিছু খুঁজে পেতেও পারেন।

আমার অভিজ্ঞতা অনুযায়ী,

আপনাকে স্বাভাবিক মৃত্যু হিসাবে
রিপোর্ট করতে বলছি।

আপনার সন্তুষ্টির জন্য আপনার পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেন।

কিন্তু ফলাফল একই হবে।

অর্থাৎ স্বাভাবিক মৃত্যু।

ঠিক আছে।

আমাকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সময় দিন।

আমি চেষ্টা করবো।

স্যার।

স্যার,

হাড় নিয়ে গবেষণা করে মৃত্যুর কারণ খুঁজে বের করা কি সম্ভব?

হ্যাঁ, সম্ভব।

এটাই তাদের দক্ষতা।

শুধু একটি হাড় থেকেই
তারা বলতে পারে,

কোন প্রাণী, তার বয়স,
লিঙ্গ এবং সব কিছু!

তারা এখানে কঙ্কাল খুঁজে পেয়েছে!
মনে করছো, তারা চুপচাপ বসে থাকবে?

তারা বিষয়টির গভীরে যাবে।
চলো, যাওয়া যাক।

আশা করি,
এটাতে কোন গর্ত নেই।

থাকলে,
সেই কূলের দিকে যাবে।

সেই কূলের দিকে নয়।

যদি বাস থেকে পালিয়ে না আসতাম,
আমরা সেই দিকে পৌছে যেতাম।

এই রুক্ষ ভূখণ্ডে টানা তিন ঘন্টা হেঁটেছো, তবুও তোমাকে ক্লান্ত দেখাচ্ছে না!

জেলের খাবার খেয়েও এই বয়সে
তুমি যথেষ্ট ফিট।

তাহলে কম বয়সে কেমন ছিলেন!

তার তোমাকে চাইবার মধ্যে
কোনো ভুল ছিল না।

যাইহোক,

তোমার শক্তি ছিল, কারিগরি দক্ষতা
ছিল, প্রেমময় শহর ছিল...

এবং পরিবারের সদস্যদের
মধ্যে ভালোবাসা ছিল।

এত কিছুর পরেও,

তুমি কারাগারের পিছনে
কিভাবে গেলে?

আজ থেকে ঠিক একুশতম দিনে,

মারমা মেলা উপলক্ষে
এই মহিষ বলি দেওয়া হবে।

আমাদের শহর ধন-সম্পদে
ভরে উঠবে।

তোমাদের মধ্যে যদি
কোনো সাহসী লোক থাকে,

সে এই মহিষটিকে সাথে নিয়ে যেতে পারে,
যা গত ১৫ বছর ধরে এখানে আছে।

অন্যথায়,

দেবীকে প্রণাম করো,

এবং আশীর্বাদ প্রার্থনা করো।

ওদিকে তাকাও, কাটেরা।

মহিষটি শক্তিশালী এবং ভারী।

এক কোপে শিরশ্ছেদ করা যাবে,

এমন একটি ধারালো
খাঁড়া তৈরি করো।

এক আঘাতে শিরশ্ছেদ করতে,

শুধু একটা ধারালো খাঁড়া নয়,

আপনার একটি শক্তিশালী
কসাইও প্রয়োজন।

তার বাহু,

তার চাইতে শক্তিশালী হতে হবে।

আমরা এটা সামলে নেবো।

আমাদের অতিরিক্ত ছুরি দরকার।

সেই মহিষের জন্য একটি খাঁড়া।

এর রক্তের জন্য তোমার
দুশো ছুরি লাগবে।

আশা করি, সময়ের মধ্যেই পাবো।

সীনা, ওকে টাকা দাও।

হ্যাঁ, মালিক।

এই নাও।

কাটেরা,

আমি তীক্ষ্ণতম ছুরি চাই।

আমার ভাগ্নী যতই
কাঁদুক না কেন,

এটা দেখে
আনন্দে লাফিয়ে উঠবে।

কাজের মাঝে কোথায় যাচ্ছো?

আমার বাচ্চা কাঁদছে।

মনে হচ্ছে,
তুমি তাকে খুঁচিয়েছো।

তাই সে কাঁদতে শুরু করেছে।

তোমার শিশু ক্লান্ত হয়ে গেলে
কান্না বন্ধ করবে।

নিজের ব্যবসার দিকে
মনোযোগ দাও।

না ভাই।

বাচ্চা সবেমাত্র জেগে উঠেছে
এবং ক্ষুধায় কাঁদছে।

আমার বেশি সময় লাগবে না।

দুধ খাইয়ে অবিলম্বে
কাজে ফিরে আসবো।

দেখে অবাক লাগছে,
একটি বৃদ্ধ গাভী প্রসব করছে!

তার উপরে,

সে দুধ খাওয়াতে পারবে?

বহু বছর পর
তোমার সন্তান হয়েছে।

শিশুটির বয়স প্রায় ছয় মাস।

কিন্তু তবুও তুমি বুকের দুধ
খাওয়াতে পারছো!

আমার অত্যন্ত সন্দেহ হচ্ছে।

আমি পারবো, ভাই।

তাই নাকি!

আমাকে দেখাও!

যখন একটি বৃদ্ধ গরু
মাঠ ছেড়ে চলে যায়,

তখন সে বাছুরকে বুকের দুধ
খাওয়াতে আসে

যদি স্তনে কোনো দুধ থাকে।

তুমি যদি গরু হতে,

আমি নিজে এটা পরীক্ষা করতাম।

যেহেতু তুমি একজন নারী,

তুমি তার প্রমান দাও।

এই দিকে ঘোরো।

আমাকে দেখতে দাও।

এই দিকে ঘোরো।

আমার দাদু এভাবে
দৌড়াচ্ছে কেন?

তার কি হয়েছে?

কাটেরা!

তুই এখানে এসেছিস কেন?

আমাকে এটা সামলাতে দে।
তুই চলে যা।

না, মা।

তুই বাড়িতে যা।
আমার কথা শোন।

কি হয়েছে?

কি হয়েছে, দিদি?

কি হয়েছে, আমাকে বল?

জামাইবাবু?

কি হয়েছে?

তোমরা সবাই
পঞ্চায়েতে এসেছো কেন?

কি হয়েছে, আমাকে বলো।

মারা !
- মারা?

মারা কি করেছে?

আমাকে বলো,
সে কি করেছে?

তোমার দিদি বাচ্চাকে
বুকের দুধ খাওয়াতে যাচ্ছিল।

সে বলেছে, "দেখে সত্যিই অবাক লাগছে
একটি বৃদ্ধ গাভী বাছুর প্রসব করেছে!"

"তুমি দুধ উৎপাদন করতে সক্ষম!"

"আমার সামনে তোমার
বুকের দুধ দুইয়ে দেখাও।"

আমাকে ছাড়।
এই, কাটেরা!

তাকে ছাড়।
বলছি, তাকে ছেড়ে দে।

শালাবাবু, অনুরোধ করছি।
তাকে ছেড়ে দে।

শালাবাবু, ওকে ছাড়।

তোমরা কোথায় আছো, আর কি
করছো, জানো কি?

সে আমার বোন এবং তার মাতৃত্বকে
অপমান করেছে।

তাকে তার কথা বলতে দাও।

আমি তাকে জিজ্ঞাসা
করতে এসেছি।

আমাদের পঞ্চায়েত ব্যবস্থা আছে।

তাকে শাস্তি দেবার জন্য,

তুমি বিচারক বা শাসক নও।

নারীর অপমানকারীকে শাস্তি দিতে,

সর্বশক্তিমান হবার
প্রয়োজন নেই, মালিক।

যে কোনো আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন
মানুষ তাকে শাস্তি দিতে পারে।

শুধু তুমি একজন মানুষ বলেই,

শ্রেণী বিন্যাস,

জাতি এবং ধর্ম,

উর্ধ্বতন এবং নিকৃষ্ট,
যাচাই না করেই,

তুমি তোমার ইচ্ছা মত কাউকে
শাস্তি দিতে যাচ্ছো?

সার্বভৌমেরও কিছু মর্যাদা
প্রদর্শন করা উচিৎ।

নিজেদের ঊর্ধ্বতন বলার জন্য
তাদের উদার হওয়া উচিৎ।

আপনি জাত এবং ধর্ম বিচার
করে ব্যবহার করেন।

কিন্তু তার জন্ম বিচার করেন না।

তোমার নোংরা মুখ বন্ধ করো।

তুমি আমাকে বিচার
করার সাহস পাও কিভাবে?

সে কি তোমার দিদিকে
স্পর্শ করেছে?

তাহলে?

তুমি তাকে স্পর্শ করলে কেন?

ওহ! আমার চোখ!

তার চোখ উপড়ে নিয়েছি কারণ সে
কামার্ত চোখে দিদির দিকে তাকিয়েছিল।

যদি সে তাকে স্পর্শ করতো,

তার শিরশ্ছেদ করতাম।

তুমি আমার সামনে
দাঁড়ানোর যোগ্য নও।

তবুও তুমি আমার বাসায় এসে,

আমার লোকদের মারছো!

কি দুঃসাহস!

যদি সে দোষী প্রমাণিত হয়,

আমি তাকে টুকরো টুকরো
করে কেটে ফেলবো।

নয়তো তাকে গুলি করে মারবো।

আমি সমালোচনা করতে জানি।

আমি শাস্তি দিতে জানি।

সে রাগের মাথায়
ভয়ঙ্কর কাজ করেছে।

দয়া করে তাকে
ক্ষমা করুন, মালিক।

আমি যদি তাকে
এখন ক্ষমা করে দিই,

আজ সে,

কাল অন্য কেউ
এরকম কাজ করবে।

তারপর পুরো শহর
দুষ্ট গুন্ডার দ্বারা পূর্ণ হয়ে যাবে।

মুরগির সাথে ষাঁড়ের
লড়াই করা উচিৎ নয়।

সাহস থাকলে,

ষাঁড়ের সাথে লড়াই করো।

এই বছর,

মল্লনকের মেলায় যাও।

ওলে মারি আনতেই হবে।

দয়া করুন, মালিক!

আমার জন্য তার জীবনকে
ঝুঁকিতে ফেলবেন না।

এসবের কারণ আমিই।

আপনি আমাকে
শাস্তি দিতে পারেন।

তাকে নয়।

মালিক!

সে আমার একমাত্র ছেলে।

আমি তাকে পরম যত্নে
লালন-পালন করেছি।

তাকে বাঘের খাদে
ফেলে দেবেন না।

এটা...

শুধুমাত্র শাস্তি নয়।

এটা আমার আদেশ।

এত চুপচাপ কেন সবাই?

পুরো শহরটা চুল্লিতে পরিণত হয়েছে!

এই আবর্তে নিজেকে জড়াস না।

তুই আমার একমাত্র ছেলে।

তোর সাথে খারাপ
কিছু হলে কি হবে?

আমি সত্যিই আতঙ্কিত!

আমার কথা শুনছিস?

হ্যাঁ, জোরে
এবং পরিষ্কারভাবে।

তুমি চাও না আমি প্রধানদের
সাথে ঝামেলা করি।

একই সুর শুনতে শুনতে
বিরক্ত হয়ে গেছি।

ওহ ঈশ্বর!

এসবের জন্য আমিই দায়ী।

আমি একটি
মারাত্মক ভুল করেছি!

আমার কারণেই সব হয়েছে!

মায়ের মতো আচরণ করছিস কেন?

আমি কি ভুল করেছি?

আমার দিদিকে রক্ষা
করা কি অন্যায়?

তারা মাঠে তোর কাছে এসেছিল।
এরপর দরজায় কড়া নাড়বে।

শত শত মারা বেরিয়ে আসবে।

এই বিকৃতদের ভয়ে,

ভবিষ্যতে, মানুষ বাচ্চা
মেয়েদের হত্যা করবে।

তুই যদি চাস, তোর মেয়ে চিন্তামুক্ত
হয়ে ঘুরতে পারুক,

আমাদের এই ধরনের পুরুষদের
মুখোমুখি হতে হবে।

তাই বলে,

জেনেশুনে

তোর জীবনের ঝুঁকি
নেওয়া উচিৎ নয়।

ওলে মারি আনতে গেলে,

তারা তোকে বাঁচতে দেবে না।

তোর কি মনে হয়,
আমরা এখন বেঁচে আছি?

আমরা যে পথ দিয়ে চলি,
তা আমাদের নয়।

যে জমি চাষ করি,
তা আমাদের নয়।

যে জল পান করি,
তা আমাদের নয়।

আমরা যা খাই এবং পরিধান করি,
তার উপর তারা জাতপাত চাপিয়ে দেয়।

আমরা বীজ বপন করি
এবং ফসল কাটি।

তবে ফলন
তারা ভোগ করেন।

আমরা জুতো তৈরি করি।

তারা পরিধান করে।

আমরা কাজ করি
কিন্তু তারা রাজস্ব উপভোগ করে।

কুকুর সর্বত্র বিচরণ করতে পারে।

আমরা কি পশুর চেয়েও অধম?

কার কাছে আমরা
এই দুঃখ প্রকাশ করবো?

ভগবানের কাছে প্রকাশ করবো,
এই ভয়ে,

তারা আমাদের মন্দিরের
ভিতরে যেতে দেয় না।

ওলে মারি আনার
এটাই সঠিক সুযোগ।

যাই হোক না কেন,

আমি এটা নিয়েই আসব।

সেটা করলেই,

সব ঠিক হয়ে যাবে,
মনে করো?

ইতিহাসে তার প্রমাণ আছে।

ব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য,

বিদ্রোহ করতেই হবে।

এটাই বিদ্রোহের
প্রথম স্ফুলিঙ্গ হোক।

আমি সফল হলে,

আমরা, নির্যাতিতরা,

শহরের আলোচ্য
বিষয় হয়ে উঠবো।

যদি ভেড়ার মত ভীরু পুরুষরা বাঘে
পরিণত না হয়, ঠিক আছে।

এটি তাদের শিকারে পরিণত হতে
বাধা দেয়।

আমার কাজ যদি
পরিবর্তন আনতে পারে,

আমি বাঘ হতে প্রস্তুত,

এবং আমি শিকার হতেও প্রস্তুত।

স্যার, এটা ইস্পাত।

মরিচারোধক ইস্পাত।

বাজারে নতুন।

পাথরে আঘাত করলেও,
এটার ক্ষতি হবে না।

রক্তে ভিজিয়ে দিলেও,

এতে মরিচা পড়বে না।

চমৎকার!

এর একটা ঘা পড়লে,

শুধু মানুষ নয়,

এমনকি যমের মহিষও,

সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুবরণ করবে।

এই পরাক্রমশালী ইস্পাত সামনে,

সাধারণ মানুষ দাঁড়াতে পারবে না।

আপনার সাহসী-হৃদয়ের
পুরুষ দরকার।

কাটেরা এসো! এসো।

দেখো, এটা স্টিলের তৈরি।

তিনি বেঙ্গালুরু থেকে এসেছেন।

তোমার ভাগ্য দেখো!

তুমি যেসব তরবারি বানাচ্ছো,
তা তোমার জীবন কেড়ে নিতে পারে।

সেই ভয়ে ভোঁতা করেছো নাকি?

কাটারি দেখতে অলঙ্কারের মত হওয়া
উচিৎ নয়।

প্রাণঘাতী হতে হবে।

যখন আপনি অস্ত্র ধরবেন,
তা করুণা প্রদর্শন করবে না।

ভয় দেখাবে।

মেশিন কাটা এবং চুল্লির তৈরি
ছুরির মধ্যে পার্থক্য আছে।

সব সাপ ফনা তোলে।

তবে শুধু কলিঙ্গ সর্পই

তাদের ফণা প্রসারিত করে।

ছুরি এমনই হবে!

আমাদের পুরুষরা দানবের মতো।

তোমার হাতে
এখনো সময় আছে।

মেলার তিন দিন
বাকি আছে।

কোথাও গিয়ে লুকিয়ে পড়ো।

অন্ত্যকর্মনির্বাহকদের জন্য মৃত্যু
নতুন নয়।

কামারদের কাছে
ছুরি নতুন কিছু নয়।

একজন লোক তোমাকে হোল মারি নেওয়ার জন্য চ্যালেঞ্জ জানায়।

অন্যজন এটি নিয়ে আসতে
চ্যালেঞ্জ করে।

কিন্তু, এই হোল মারি কি?

হোল মারি মানে শহরের সীমান্তে
মহিষের রক্ত ঝরানো।

তাতে বিশেষ কী আছে?

আমাদের শহরেও
মানুষ মহিষ বলি দেয়।

প্রতিটি শহর এই
অনুষ্ঠান সঞ্চালন করে।

কিন্তু,

আপনি কি এক শহর থেকে অন্য শহরে
মারি নিয়ে যাওয়ার কথা শুনেছেন?

শহরের বাইরে হোল
মারি নিয়ে যাওয়া!

পার্শ্ববর্তী শহরগুলির দ্বারা, হোল মারি মেলা তিন বছরে একবার হয়।

আমরা বিশ্বাস করি,
আমাদের শহরে যদি মেলা হয়,

আমরা সুখে এবং
স্বাচ্ছন্দ্যে বাস করবো।

এই কারণে,

অন্যান্য শহরে অনুষ্ঠিত মেলায়,

উৎসর্গ করা মহিষের রক্ত
আমাদের হাতে মাখি।

চিৎকার করে ঘোষণা করি, আমরা আপনাদের হোল মারিকে আমাদের শহরে নিয়ে যাচ্ছি।

এবং আমাদের শহরে মেলা
পরিচালনা করবো।

এরপর আগামী বছর আমাদের শহরে
মেলা পরিচালিত হবে।

এটুকুই!

"করার থেকে বলা অনেক সহজ।"

আপনি কুমির ভরা পুকুর থেকে
কাদা তুলে আনতে পারেন।

কিন্তু হোল মারি
আনতে পারবেন না।

তাদের থামাতে,

অভিভাবকদের নিয়োগ করা হয় না।

দানব মোতায়েন করা হয়।

বাতাস একদিকে প্রবাহিত হয়।

কিন্তু সেই দানবদের অস্ত্র

বিভিন্ন দিক থেকে আঘাত করে।

একটি অসতর্ক পদক্ষেপ,

আপনার শরীর থেকে,
ঝর্নার মত রক্ত...

বার করতে পারে।

এক হাতে হোল মারি,

অন্য হাতে অস্ত্র।

এইভাবে একজনকে যুদ্ধের
মুখোমুখি হতে হয়।

হোল মারি আনতে,

শুধু শক্তিই যথেষ্ট নয়।

সাহসী হৃদয়ও দরকার।

শানভোগবাবু, দয়া করে নিয়ে দেবীর অলঙ্কার নিয়ে আসুন।

বলির মহিষ নিয়ে এসো।

বলি অনুষ্ঠান শুরু হোক।

দশটি গ্রামের মানুষের উপস্থিতিতে,

দেবী খুশি হয়েছেন।

এই মহিষটটি তাদের সাথে নিয়ে যাবার
জন্য সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।

কেউ কি এগিয়ে আসবে?

এই, রুদ্র...

হ্যাঁ, মালিক।

বাড়িতে পৌঁছানোর আগেই,

তার মৃত্যুর খবর
আমার কাছে পৌঁছানো চাই।

তোমাদের হোল মারি আমার গ্রামে
নিয়ে যেতে আমি এখানে এসেছি।

তোমাদের হোল মারি আমার গ্রামে
নিয়ে যেতে আমি এখানে এসেছি।

তোমাদের হোল মারি আমার গ্রামে
নিয়ে যেতে আমি এখানে এসেছি।

কাটেরা মন্দির চত্বর থেকে
বেরিয়ে এসেছে।

তাকে শহরে প্রবেশ
করতে দাও।

আমাদের লোকেরা তাকে ফাঁসি দেওয়ার
জন্য কেরে বিড়িতে অপেক্ষা করছে।

এই গ্রাম নয়,

হোল মারি যেন কেরে বিড়ি
পার হতে না পারে।

তার হাত কেটে ফেলো।

মালিক, কাটেরা কেরে বিড়ি
পার করেছে।

আমি কোটে বিড়িতে
শিকারী মোতায়েন করেছি।

তারা অপ্রত্যাশিত আক্রমণ করে।

তাদের ফাঁদ থেকে, এমনকি
বাঘও রেহাই পায় না।

বাঘের তুলনায় সে কিছুই নয়।

সূর্যাস্তের পর ওলে মাড়ি নিয়ে
আসলে কোনো লাভ নেই।

এটা সূর্যাস্তের আগেই
অর্পন করতে হবে।

অগ্রহারার নারীবাহিনী,

লঙ্কার গুঁড়ো ভর্তি ব্যাগ
নিয়ে প্রস্থুত আছে।

সে যদি এক সেকেন্ডের
জন্যও চোখ বন্ধ করে,

শত শত তলোয়ার
তার হৃদয়ে প্রবেশ করবে।

সূর্য অস্ত যাচ্ছে।

যদি তার আগে ওলে মারি
অর্পন করা না হয়,

আগামী বছর মাল্লানা কেরে-তেই
মেলা অনুষ্ঠিত হবে।

যদি সে সেখান থেকে পালাতে চায়,

দেবী কাটেরাভাকে তার উদ্ধারে
আসতে হবে।

কাটে...

কাটেরা!

কাটেরা দীর্ঘজীবী হোক!
কাটেরা দীর্ঘজীবী হোক!

এরপর কী হলো?

বৃষ্টিতে মাটি উর্বর হয়ে যায়।

মাঠগুলো সবুজ হয়ে যায়।

পুরো শহর শান্তিতে নিঃশ্বাস নেয়।

মাঠে কাজ করা কৃষকদের...

মুখে হাসি ছিল।

কিন্তু

জমিদারের মনে,

রাগের আগ্নেয়গিরি ফুটছিল।

সে কি এখানে আছে?

প্রভা হাতে খবরের
কাগজ ধরে আছে!

নিশ্চিত কিছু বড়
খবর আছে।

তোমাদের সবার জন্য
ভালো খবর!

দেখো,

দিদি, আমরা সবাই পন্ডিত।

কিন্তু লিখতে-পড়তে পারি না।

দয়া করে পড়ে শোনাও।

ঠিক আছে।

রাষ্ট্রপতি ভূমি সংস্কার বিল
অনুমোদন করেছেন।

মুখ্যমন্ত্রী দেবরাজ উরস
সাংবাদিকদের জানিয়েছেন,

রাষ্ট্রপতি আজ কর্ণাটক ভূমি সংস্কার
বিলে তাঁর সম্মতি দিয়েছেন।

কি বলতে চাইছো?

চাষী জমির মালিক।

এর মানে,

জমি একটি প্রাকৃতিক সম্পদ।

এখানে বসবাসকারী প্রত্যেকের
এটা উপভোগ করার অধিকার আছে।

কিন্তু এখানে,

ক্ষমতাশালী ও অর্থশালী মানুষেরা,

জমি ক্রয় করে
জমিদার হচ্ছে।

এই কারনে,

জমিদারি ব্যবস্থায়
সংস্কার আনতে,

সরকার ১৯৫১ সালে ভূমি সংস্কার
বিল প্রস্তাব করেছিল।

"শুধু জমিদার মালিক নয়"

"এমনকি চাষীরাও মালিক"

সেই সময়, কয়েকজন সহমত এবং
কয়েকজন অসম্মত হয়েছিলেন।

তাই বিলটি পাস হয়নি।

কিন্তু এখন,

বিলটি অনুমোদিত
এবং পাস হয়েছে।

কি বলতে চাইছো?

আমাদের মালিককে
ভাগ দিতে হবে না?

তোমাদের টাকা দিতে হবে না,
দাস হয়ে থাকারও দরকার নেই।

দয়া করে শান্ত থাকো।

মালিক যদি এইসব
জানতে পারেন,

করের পরিমাণ বাড়িয়ে বারো
থেকে ষোলো ব্যাগ করবেন।

এটা পঞ্চায়েত স্তরে
নেওয়া কোনও সিদ্ধান্ত নয়।

এই সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছেন।

আমাকে বিশ্বাস না করলে,
আমার সাথে এসো।

স্যার,

সরকার কর্তৃক একটা নতুন আইন পাস হয়েছে, শুনলাম।

সরকারের ক্রিয়াকলাপ
ঢেঁকুর তোলার মতো...

একটার পর একটা
আসতেই থাকে।

তুমি আমাকে এখন
কি করতে বলছো?

স্যার,

এই আইন কৃষকদের জন্য,

এর জন্য কৃষকরা
কঠোর পরিশ্রম করেছেন।

ভগবান এখন তাদের
মনোবাসনা পূর্ণ করেছেন।

দয়া করে নিশ্চিত করুন,
যাতে এটা সবার কাছে পৌঁছায়।

তোমার এইসবে নেতৃত্ব
দেবার দরকার কি?

এটা নেতৃত্ব নয়,

মানবতা।

দণ্ডিতের চামড়া দিয়ে
বানানো ঢোল,

যতই ভুল বাজান না কেন,

সঠিক ভাবেই
বোল তোলে।

কারণ পিট্টাই খাবার পর
এটা সিধা হয়ে যায়।

কৃষকের ফসল ক্ষতিকারক
পতঙ্গ হবেন না।

কৃষি জমিতে উপকারী
কেঁচো হয়ে উঠুন।

ভারত সরকার, কৃষকদের
কল্যাণের কথা মাথায় রেখে,

দাসত্ব

সামন্তবাদ

অস্পৃশ্যতা ইত্যাদি
সমাজের কুপ্রথা,

নির্মূল করার জন্য

ভূমি সংস্কার আইন
পাস করেছে।

এই আইন অনুযায়ী

জমি চাষ করা কৃষকরা,

তাদের লিজ চুক্তি জমা দেবে,
সংশ্লিষ্ট তালুক অফিসারের কাছে।

এবং তাদের নামে নিবন্ধিত
চাষের জমি পাবেন।

যাই হোক,

সরকার আসবে এবং যাবে।

আমরা আমাদের জমিদারের
বিরুদ্ধে যেতে পারি না!

শোনো,

একটা বিষয় আরেকটার
দিকে নিয়ে যায়।

আমাদের যা আছে তা হারালে,
আমরা চিরতরের জন্য ধ্বংস হয়ে যাবো।

আরেকটা উপায় আছে।

জমিদারের
সাথে কথা বলা যাক।

আমরা তাকে বোঝাতে পারি, করের
পরিমাণ ১২র জায়গায় ৮ ব্যাগ করতে।

হ্যাঁ, একদম!
আপনারা সবাই একমত?

হ্যাঁ, আমরা একমত।

এই মানসিকতার কারণেই,
তারা তোমাদের উপর অত্যাচার করছে।

ভালো পরামর্শ ছিল।

যদি কিছু গন্ডগোল হয়?

আমাদের যা আছে,
তা যদি আমরা হারিয়ে ফেলি...

তখন আমরা কি করবো?

সবাই আমার কথা শুনুন।

সবাই জানো, তোমাদের কত জমি
আছে এবং কতটা ফলন দিতে হয়।

সেই অনুযায়ী,

আগামীকাল সবাইকে
বাড়িওয়ালাকে কর দিতে হবে।

আমার কথা সবাই শুনুন।

এসব কি?

বিল পাসের পরও
তারা ঘোষণা করছে!

নতুন আইন অনুযায়ী,
আপনার ২২০০ একর জমি,

এবং কালে গৌড়ার
১৮০০ একর জমি

কৃষকদের কাছে যাবে।

এটা কিভাবে সম্ভব?

এই জমি আমার
পূর্বপুরুষদের অর্জিত!

আমরা এটা দিতে পারবো না!

দেখুন, মিস্টার কালে গৌড়া।

আপনি জমিদার বলে...

স্বৈরশাসক হতে পারেন না।

দরিদ্র সহকর্মীরা আমাদের জন্য
শতাব্দী ধরে কাজ করেছে।

তারা দাসত্বের অধীনে ছিল।

তাদের পরিশ্রমের ফল
ভোগ করতে দিন।

দারিদ্র্য দূর হবে,

আপনার সম্পদ ও ঐশ্বর্য নয়।

শুনুন মশাই,

আমাদের গ্রামের চেন্না নামের একজন
আট মাস আগে জমি লিজ নিয়েছে,

একটি ফালতু আইনের কারণে,

তুমি কি চাও, আমি আমার
জমি তাকে দিয়ে দিই?

প্রতিটি আইন এবং বিলে কিছু
করণীয় এবং অকরণীয় থাকে।

আপনি আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী
তা বাস্তবায়িত করতে পারেন না।

সরকার অনেক ভেবে এই বিলের
খসড়া তৈরি করেছে।

মনে রাখবেন,

আমাদের সম্মান বজায় থাকবে,
যদি আমরা স্বেচ্ছায় এটি প্রদান করি।

যদি আমরা না দিই,

তারা জোর করে ছিনিয়ে নেবে।

আমরা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারবো না।

আর এই কৃষকেরা
বাইরের লোক নয়।

তারা আমাদের লোক।

আমাদের নিজের শহরের মানুষ।

আমরা যদি নিজেদের
লোকের বিরুদ্ধে যাই

আমাদের জমিতে
কে কাজ করবে?

হায়েনারা মাংস খায় বলে,

তাদের সিংহের কাছে
ভাগ চাওয়া উচিৎ নয়।

যে তার বাবার জমি দেখাশোনা করে,
তাকে জমিদার বলা হয় না।

যে তার বাবা হবার জন্যই জন্মায়,
তাকে জমিদার বলে।

যারা

আইন মেনে নিতে প্রস্থুত,

এখান থেকে চলে যেতে পারেন।

চালবার সময় বোঝা যায়,

কোনটা ভুষি এবং কোনটা চাল।

এতদিন আমরা খাঁচায় বন্দী বাঘের
উপর অত্যাচার করতাম।

কিন্তু এখন,

আইনের চাবি দিয়ে সরকার তাদের
তালা খুলে ছেড়ে দিয়েছে।

তাদের সাথে ভালভাবে আচরণ করুন।
তারা আপনাকে মান্য করবে।

শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা করলে,

তারা বিদ্রোহ করবে।

বিদ্রোহী বাঘ তাদের শাস্তিদাতার
উপর প্রথম আক্রমণ শানায়।

দেখা হবে।

আমাদের কর্মপরিকল্পনা এখন
ঠিক করা যাক।

হুজুর, কাটেরা একটা
দল নিয়ে এসেছে।

এখানে কি হচ্ছে?

আপনি আগামীকাল
আসতে বলেছিলেন।

কিন্তু আমরা আজ এসেছি।

কারণ,

আগামীকাল আমাদের।

মনে রাখ, যে তুই জমিদারবাবুর
সাথে কথা বলছিস।

হ্যাঁ, অবশ্যই।

এখন থেকে,
যার কাগজপত্র আছে, সে মালিক নয়।

চাষী হল মালিক।

জমি

জমিদারবাবুকে ত্যাগ করেছে।

এবং তার সন্তানদের
আলিঙ্গন করেছে।

জমিদারবাবুর বিরুদ্ধে যাওয়ার
সাহস কি করে হয়?

আজ থেকে আমি
তার বিরুদ্ধে নই।

মেলা চলাকালীন,

আমার উপর যে ছুরিগুলো
ছোঁড়া হয়েছিল,

আমি জানি, তার কতগুলো
মাল্লানা কেরে থেকে ছিল।

এবং তোমার বাড়ি থেকে কতগুলো।

আমি ভাল করেই জানি।

এই, কাটেরা!

তোর কি মাথা খারাপ হয়েছে?

আমি যেসব ছুরি বানাই,
তাদের দেখার চোখ নেই।

কিন্তু তারা কথা বলতে পারে।

একটা কথা মাথায় রেখো।

যে ছুরিগুলো আমি বানাই,

দুইবার লালবর্ন ধারণ করে।

প্রথমত, যখন এটি গলানো হয়,

দ্বিতীয়ত, যখন এটি
রক্তপাত ঘটায়।

এই হাত,

উভয়ের সাক্ষ্যই বহন করে।

এতদিন চাষাবাদকে ব্যবসা
বানিয়েছেন আপনারা।

আপনাদের খেলা শেষ হয়েছে।

এখন, জমি আমাদের।

সেই জমি থেকে উৎপাদিত ফসল,

আমাদেরই হবে।

এখন থেকে,

আমরা আপনাকে
একটি দানাও দেবো না।

কাটেরা!

তুই এত কথা বলছিস,

তবুও তাঁরা

চুপ করেই আছেন।

তারা চুপ করে আছেন।

মানে তারা রাজি হয়েছেন।

স্যার।

তারা আমাদের গ্রামে পা
দিতে ভয় পেতো।

এখন তারা সাহস করে আমাদের
বাড়িতে পা রেখে হুমকি দিল!

স্যার, আমার মনে হয়,
আপনার এটা দেখা দরকার।

এগুলো স্বাভাবিক মৃত্যু নয়।

এখানে পাওয়া সব
কঙ্কাল পুরুষের।

বয়স ২০-৫০ বছর।

প্রতিটি কঙ্কালের গায়ে
মারাত্মক ক্ষত আছে।

এটা কোনো কাকতালীয়
ব্যাপার হতে পারে না।

আমরা যে ইজারা দিয়েছি,

তা জল্লাদের ফাঁদে
পরিণত হয়েছে।

কেউ তাদের উপর ধারালো
অস্ত্র নিয়ে হামলা করেছিল।

দেখুন,

হাতের হাড় ভেঙে গেছে।

মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে।

কৃষকদের মালিক ঘোষণা করে,

সরকার তাদের প্রতি
নমনীয়তা দেখিয়েছেন।

এই দেখুন, স্যার।

মাথার খুলি ভেঙে গেছে।

শুধু দু-একজন নয়

আপনি ১০৭টি কঙ্কালের সবকটিতেই
ক্ষতচিহ্ন দেখতে পাবেন।

প্রতিটি হাড় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এটা স্বাভাবিক হতেই পারে না।

কৃষকরা বেঁচে থাকলে তবেই,

জমির মালিক হতে পারবে।

এটা একটা গণহত্যা।

সেখানে গণহত্যা হয়েছিল।

তাই সেখানে ১০৭ টি কঙ্কাল
পাওয়া গেছিল।

তোমরা কি কৃষক?

ম্যাডাম,

কখন কি হয়েছে কে জানে?

স্বাভাবিক মৃত্যুর রিপোর্ট করুন।

কেউ এসবে পাত্তাও দেয় না।

আপনার কি মাথা খারাপ হয়েছে?

আপনাকে বলছি, এই ঘটনা
১৫-২০ বছর আগে ঘটেছিল।

যদি গণহত্যা হয়ে থাকে?

অপরাধীরা হয়তো আজও
সমাজে অবাধ বিচরণ করছে।

এত দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ
করেছেন কেন!

আপনার কি
সামাজিক দায়বদ্ধতা নেই?

আমি এটার শেষ
দেখে ছাড়বো।

এবং সত্যকে বিশ্বের সামনে
টেনে আনবো।

স্যার,

কে এবং কেন খুন করেছে, তা এই
রিপোর্ট প্রকাশ করতে পারবে কি?

আমাদের সেই বিষয়গুলো
তদন্ত করা উচিৎ।

যদি কোন খুনের খবর পাওয়া যায়,
আমাদের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হবে।

আমরা ব্যর্থ হলে,

তারা একটি বিশেষ দল গঠন করবে।

তারা লাশ না পুঁতে,
দাহ করলে ভালো করতো।

তাই সেখানে ১০৭ টি কঙ্কাল
পাওয়া গেছে।

তোমাদের কৃষকদের?

কোনো পশুপালক।

তুই কে?

থাম, দাঁড়া বলছি।

তুই কে?

তারা এসেছে।

অনেক লোক।

এই, পুলিশ!

আমাদের কথা শুনলে,
তোমার ক্ষতি করবো না।

তাকে হাতকড়া পরিয়ে
বার করে আনো।

যদি অন্য কিছু করার
চিন্তা করো,

তোমাদের দুজনকেই জীবন্ত
পুড়িয়ে ছাই করে দেবো।

জ্বালিয়ে দে।

এ কে রে?

আমি কিছু কুস্তিগীর
আশা করছিলাম!

কিন্তু সে একজন অসহায় বুড়ো!

সেখানে নতজানু হও।

আপনি দয়া করে
চলে যান, অফিসার।

ভাই,

সে জেলে ছিল। তার দ্বারা তোমার
কোনো ক্ষতি হবে না।

ওই অসহায় বৃদ্ধকে রেহাই দাও।

তাকে রেহাই দেবার কথা
ভুলেই যাও।

আমি তোমাকেও রেহাই দেব না।

আমরা পুলিশের জন্য
প্রমাণ রাখি না।

যখন একজন পুলিশ
নিজেই অপরাধের সাক্ষী,

আমরা তাকে কখনোই
রেহাই দিতে পারি না।

তার গায়ে কেরোসিন
ঢেলে দে।

ভাই, আমি তোমাকে বা
তাকে চিনি না।

আমাকে মারতে চাও কেন?

আমার একটা পরিবার আছে।

তোমাকে অনুরোধ করছি,
আমাকে ছেড়ে দাও।

তাকে রেহাই দাও।

সে কিছুই জানে না।

কি বলছো?

তিনি কিছুই করেন নি।
তাকে রেহাই দাও।

এই?
- ভাই?

জিজ্ঞাসাবাদ করো।

শোনা যাচ্ছে না।
জোরে কথা বলো।

তোমার সাথে
কথা বলছি, বুড়ো।

আক্রমণ কর।

কোথায় যাচ্ছো?

চলো, এখান থেকে
যাওয়া যাক।

তাড়াতাড়ি করো।

অকেজো মাল যত!

তোরা একশোজন ছিলিস।

সে জেলের পচা সবজি।

তবুও, তোরা তাকে শেষ
করতে পারিস নি।

পনেরো বছর কেটে গেছে,

তবুও স্মৃতি এখনও
তাজা আছে।

পরাক্রমশালী তলোয়ারবাজরা
তার কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল।

মহিলারা সামনের উঠোন
পরিষ্কার করতে ভয় পেতো।

জানিস কেন?

রক্তপাতের মাধ্যমে সে রাস্তাগুলোকে
লাল করে দিয়েছিল।

সে যে ওলে মারি নিয়েছিল,

তাকে গ্রেপ্তার করার পর,

তা আমাদের গ্রামে
ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

সে ফিরে আসছে।

সে আমাদের ওলে মারি
আবার নেবে।

সেই কাটেরা!

আমার স্ত্রীর প্রার্থনায়
আমি বেঁচে গেলাম।

অনাগত সন্তানকে না দেখেই
আমি মরে যেতাম।

এত কিছুর পরেও
এগিয়ে যেতে চাও!

আমার কথা শোনো।

ফিরে চলো।

ঘুর্নিঝড়ের ভয়ে,

আপনি শ্বাস বন্ধ করতে
পারবেন না।

তুমি ছুরি তৈরী করতে।

হত্যা করতে সক্ষম।

কিন্তু আমি একজন পুলিশ।

মা, বোনএ বং গর্ভবতী স্ত্রী
আমার জন্য অপেক্ষা করছে।

অনুগ্রহ করে বোঝার
চেষ্টা করো।

আদালত প্যারোলের সময় একজন
পুলিশ মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছিল।

এখানে আমি কনস্টেবল,
আমিই কমিশনার।

আমিই বিচারক এবং
আমিই রায় দিই।

তুমি আমার সাথে
ফিরে চলো।

রাইফেল তাক করে,

আপনি আমার জীবনের পথ
বদলাতে পারবেন না।

কেবলমাত্র একটি রাইফেল নয়,

শত শত কামান থাকলেও,

তারা আমাকে যাওয়া থেকে
আটকাতে পারবে না।

ঝুঁকি নেবার মত তোমার
সেখানে কি আছে?

দেখো, কনে কেমন লজ্জায়
লাল হয়ে আছে!

যাত্রার শুরুতে
সে মাথা নিচু করেছে,

এখনো মাথা উঁচু করেনি।

এত অল্প বয়সে বিয়ে করা
ভাগ্যের ব্যাপার।

ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির পাশাপাশি,

শানভোগের মেয়ের বিয়েতে

তুমি একটা বিশাল ভোজ
আশা করতে পারো!

ভাল বলেছো।

কি করছিস, গাধা!

কোনো বিড়াল কি
রাস্তা পার করেছে?

বিড়াল নয়,

বাঘ।

রাস্তা আটকেছিস কেন?

এর পরিণাম তোকে
ভোগ করতে হবে।

রাস্তা ছাড়লেই ভালো করবি।

শানভোগবাবু,

আপনার মেয়ে প্রভা
আর কাটেরা

একে অপরের সাথে
গভীর ভালোবাসায় আবদ্ধ।

অনুগ্রহ করে
তাদের বিয়ে দিন।

দয়া করে, আপনার
উদার মনের পরিচয় দিন।

এইসব কি চলছে?

কাকা!

সে কাটেরা,
যে ওলে মারি এনেছে।

নিজের মুখ বন্ধ রাখুন।

দেখ, প্রভা।

শ্রীঙ্গেরী মঠ থেকে তোর বিয়েতে
যোগ দিতে স্বামীজী আসছেন।

সবাই এখানে। আমি,
তোর ভাই, তোর মা,

তোর পিসি যে তোর
দেখাশোনা করেছে,

শামাচার যে তোকে
স্কুলে নিয়ে যেতো,

তোর সঙ্গীত শিক্ষক
শঙ্কর শাস্ত্রী মহাশয়ও এসেছেন।

তিনটি ট্রাক ভর্তি আত্মীয়দের
তুই চাস,

নাকি এই মানুষদের, যাদের সাথে
তোর কোনো সম্পর্কই নেই?

প্রভা, আমি তোকে তোর মায়ের
মতো দেখাশোনা করেছি।

কিন্তু তোর বাবা কুড়ি বছর ধরে
তোকে বড় করে তুলেছেন।

দয়া করে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে
ভুল পদক্ষেপ নিস না।

শোন...

শোন...

আজ থেকে,

সে আমাদের জন্য মৃত।

না!

ভাবানুবাদ ও সম্পাদনা :
সুদীপ চক্রবর্তী।

Aতে অ্যাপেল।
- Aতে অ্যাপেল।

Bতে বল।
- Bতে বল।

Cতে ক্যাট।
- Cতে ক্যাট।

Dতে ডগ।
- Dতে ডগ।

পাদ্দু, ভালো আছিস তো?

পিছনের দরজায় কেন?
সদর দরজায় আয়।।

মা তোর জন্য
নতুন জামা পাঠিয়েছে।

মা কেমন আছে?

বাবার রাগ কমেছে?

এসব কি, প্রভা?

ওকে বাইরে দাঁড় করিয়ে
রেখেছো কেন?

ভিতরে নিয়ে যাও।
খেতে দাও।

দয়া করে ভিতরে এসো।

না। বাবা জানে না,
আমি এখানে এসেছি।

দেরি করলে
আমাকে তিরস্কার করবে।

এক মিনিট।

একজন পুরোহিত ছুরি নিয়ে
কি করবে?

আইনটা পাস হওয়ার পর
পরিস্থিতি আর আগের মতো নেই।

ছুরি বিপদকে দূরে রাখবে।

আমি এখন আসছি, দিদি।

মনে হয়, শালা আসায়,
জামাইবাবুকে ভুলে গেছিস।

সেরকম কিছু নয়।

দেখে নে। কেমন লাগছে?

আমার শরীরে ও আত্মায়
হিরণ্য কাশ্যপ আছেন।

এমন অভিনয় করবো যাতে ভক্ত প্রহ্লাদ
নাটকের দ্বারা মানুষ আমাকে মনে রাখে।

চাংলা? চাংলা?

শ্রী শম্ভুলিঙ্গেশ্বর কৃপাপোষিতা
নাট্য মণ্ডলীর পরিচালনায়,

মিনিট দুয়েকের মধ্যে,

ভক্ত প্রহ্লাদ নাটক শুরু হবে।

সবাইকে বসার জন্য অনুরোধ করছি।

দেখো,
তিনি কেমন অভিনয় করেন।

এই, এতো চাংলু!

সে কথাও বলতে পারে না!
মঞ্চে উঠেছে কেন?

আমি কে?

কশ্যপ ব্রহ্মার পুত্র।

দিতির গর্ভ থেকে জন্ম।

চতুর্মুখী ব্রহ্মার নাতি।

ভাগ্যের হাত ধরে
নিয়তি পাল্টেছি।

আমি এমন একজন বিজয়ী,
যে মৃত্যুকে জয় করেছে।

আমি অদিতির সন্তানদের
আস্ফালনকে স্তব্ধ করেছি।

আমি সেই বিজয়ী যে
আদিত্যকে বশীভূত করেছি।

আমি এমন সর্বশক্তিমান, যার পায়ের নীচে সমস্ত স্বর্গীয় অঞ্চল আছে।

আমি এগিয়ে গেলে,
পৃথিবী কেঁপে ওঠে।

মাথা তুললেই,
আকাশ কেঁপে ওঠে।

আমি যখন হাত বাড়াই,
সমগ্র সৃষ্টি কেঁপে ওঠে।

যখন চতুর্মুখী ব্রহ্মার সৃষ্টিসকল,
আমার আদেশ অনুসরণ করছে...

তখন, আমার ছেলে

সেই ছেলে, যাকে আমি
বড় করে তুলেছি

যে আমাদের বংশ এগিয়ে নিয়ে
যাওয়ার অধিকারী

তার কারণে,
আজ আমার মনে শান্তি নেই!

লজ্জা!

চরম লজ্জা!

এটাকে কি জীবন বলা যায়?

কি দুর্ভাগ্য আমার!

কি দুর্ভাগ্য আমার!

ভাবতাম, আমি সর্বশক্তিমান!

কোন মহাশক্তি
আমাকে তাড়িত করছে?

কোন পরাশক্তি আমার ছেলেকে
আমার শত্রু বানিয়েছে?

কোন মহাশক্তি তাকে আমার
মুখোমুখি হওয়ার শক্তি দিয়েছে?

কি আশ্চর্য!

কোন মহাশক্তি তাকে মৃত্যুর
হাত থেকে বাঁচিয়েছে?

কোন মহাশক্তি লজ্জায় আমার
মাথা নিচু করে দিয়েছে?

হ্যাঁ! এটা তিনি!

সেই শয়তান!

হরি, আমাদের বংশের দীর্ঘকালের শত্রু,
এই সবকিছুর জন্য দায়ী।

এই হরি!

দুষ্ট লোক!

বিশ্বাসঘাতক !

তুমি আমার ছেলের
মনে প্রবেশ করেছো।

তুমি তার হৃদয়ে
গোলমাল পাকিয়েছো।

তুমি তাকে তোমার হাতের
পুতুল বানিয়েছো!

তুমি যদি একজন
পরাক্রমশালী মানুষ হও,

যদি সত্যিই নিখুঁত
সর্বোচ্চ স্বত্বা হও,

যদি সত্যিই আমার মত
প্রকৃত পুরুষ হও,

নিজেকে প্রকাশ করো।

আমার সামনে নিজেকে
প্রকাশ করো।

যদি তোমাকে দুই ভাগে ভাগ
করতে না পারি,

এবং তোমার ভিতরের অংশ দিয়ে
একটা মালা তৈরি করতে না পারি,

আমি হিরণ্য কাশ্যপ নই।

আমি হিরণ্য কাশ্যপ নই।

চাংলু জিন্দাবাদ!

সে আনন্দে এতই আপ্লুত,
যে কথা বলতে পারছে না।

আমার হাত বেঁধে দিলি কেন?

আমাদের ক্ষমা করো। এটা...

আমার ভূমিকা হারিয়েছি বলে
আমি বিচলিত নই।

তোর অভিনয় দেখে,

আমি হাততালি দিতে
পারলাম না।

এটা আমাকে বিচলিত করেছে।

জামাইবাবু!

শালাবাবু!

তুই তোর বাবার
সুনাম রেখেছিস।

হ্যাঁ, তুই পেরেছিস।

হ্যাঁ।

স্যার,

আমরা শুরু থেকেই
আপনাকে সমর্থন করে আসছি।

আপনাকে অর্থ প্রদান করেছি।

আপনাকে লোকবল দিয়েছি।

এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট দিয়েছি।

তবুও, আপনি আমাদের
সকলকে ধ্বংস করছেন!

এটা কি ঠিক?

শুরু থেকে

আমরা আপনাকে
বিজয়ী রেখেছি।

আমরাই আপনার সিংহাসন...

রক্ষা করেছি।

এখন আপনার অনুগ্রহ
শোধ করার পালা।

আপনাদের সমস্যা বুঝতে পারছি,
মিস্টার দেবরায়।

একজন বিধায়ক হিসাবে আমি
আর কি সাহায্য করতে পারি?

ম্যাডাম ইন্দিরা এই আইন
পাশ করিয়েছেন।

মিস্টার উরসই
এটির বাস্তবায়ন করছেন।

স্যার,

তাদের জিজ্ঞাসা করুন, এই আইন
কার্যকর হওয়া আটকাতে কত টাকা চান?

আমরা সেই টাকার ব্যবস্থা করবো।

অর্থের প্রতি তাদের কোনো
লোভ নেই।

তিনি গরীবদের প্রতি
অত্যন্ত সদয়।

যদি এই আইন কার্যকর হয়,

লক্ষ লক্ষ পরিবারের একটি
স্থিতিশীল ভবিষ্যত হবে।

আমরা নিশ্চিতভাবে
বিশাল ভোটব্যাংক পাবো।

আপনার ক্ষমতা রক্ষা করতে,

আমাদের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া
ন্যায়সঙ্গত নয়।

মিস্টার কৃষ্ণ,

মানুষ অক্ষমতার কারণে
বিশ্বাসঘাতকতা করে।

তাদের বলবেন,
যে ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়।

এক কথা বারবার বলে
কোনো লাভ হবে না।

যাই হোক না কেন!
তারা সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নেবেন না।

আপনাদের বাঁচবার
একটা মাত্রই উপায় আছে।

সেটা কি?

ভুল রাস্তা।

সরকার একটা জরিপ
দল পাঠাবে।

আপনারা নিশ্চিত করুন,

ইজারাদাররা আপনাদের ক্ষেতের কাছাকাছি যেন না আসতে পারেন।

যদি ইজারাদাররা
উপস্থিত না হয়,

জমি আপনাদের কাছেই থাকবে।

আমি আপনাদের সম্ভাব্য
সব উপায়ে সমর্থন করতে পারি।

এই নিশ্চয়তাটুকুই যথেষ্ট!

আপনি কেবল শীতল বাতাসের
মত হোন।

আমরা আগুনের মতো
জ্বলতে প্রস্তুত।

ওইসব কৃষকরা,

মাঠের কাছাকাছি
আসতে পারবে না।

মালিক,

অন্যান্য গ্রামে,

মাঠে কাজ করা থেকে
আমরা কৃষকদের থামাতে পারি।

কিন্তু,

যতক্ষণ কাটেরা বেঁচে আছে...

এটি প্রকৃতি মায়ের মুখে
একটি নাকছাবির মত লাগছে।

সত্যিই তাই।

এই প্রথমবার,

মনে হচ্ছে,
আমরা এটার মালিক।

যদি প্রভা ও কাটেরা বিয়ে করে,
আমরা খুব খুশি হবো।

লজ্জা পাচ্ছিস, হাহ?

অনুসন্ধান শুরু করো।
- হ্যাঁ, স্যার।

রাচাপ্পা, ওদিকে যাও।

হ্যাঁ, স্যার।

অফিসার!

এখানে কি হচ্ছে?

পরে বলছি।

প্রতিটি কোণে অনুসন্ধান করো।

সেখানে দেখো।
- হ্যাঁ, স্যার।

এদিকে দেখেছো?

প্রতিটি কোণে অনুসন্ধান করো।

এই, থামো।

প্রতিটি কোণে অনুসন্ধান করো।

দয়া করে এতে পা দেবেন না।
আমি আপনাকে অনুরোধ করছি।

ঈনি আমাদের দেবী।
আমি আপনাকে অনুরোধ করছি।

এসব কি?

তোমার সাহসের প্রশংসা করি!

অপরাধ করেও ঘরেই আছো!

তাকে গ্রেপ্তার করো।

কেউ এটা
ইচ্ছাকৃতভাবে করেছে।

আমার ভাইয়ের উপর রাগে
কেউ এই কাজ করেছে।

থামো। কোথায় যাচ্ছো তোমরা?

আমাদের ভাইকে দেখতে চাই।

লোহার হাতুড়ির শব্দের নিচে,

চন্দন গাছ কাটার শব্দ
তুই লুকাতে পারবি না, বজ্জাত চোর!

অফিসার,

আমি কেন গাছ কেটেছি,
সেই প্রশ্ন করার পরিবর্তে...

আমাকে জিজ্ঞাসা করুন,
কেন কৃষকদের পক্ষে দাঁড়াচ্ছি?

আমি উত্তর দিতে পারি।

যদি আমাকে মারতে থাকেন,
আপনার লাঠি ভেঙ্গে যাবে।

আমাকে দিয়ে কিছু
বলাতে পারবেন না।

কত দুঃসাহস তোর!

শয়তান!

আসুন।

কাটি!

হে ভগবান!

এসব কি, কাটি?

মেরে তোর গায়ে
কালশিটে ফেলে দিয়েছে!

পাগল হয়ে গেছে নাকি?

দিদি,

বড় মাথাদের খেলায়,

আমরা কেবল বোড়ে মাত্র।

প্রভা।

যাই হোক না কেন,

কৃষকদের যেন তাদের মাঠে
কাজ বন্ধ না করে।

যে ঊর্ধ্বতনই আসুক,

তুমি নিশ্চিত করবে,

আমাদের আশীর্বাদ যেন
অভিশাপে পরিণত না হয়।

দেবী কাটেরাভা আমাদের
পথ দেখাবেন।

যত বলেছিলাম,
তত টাকাই দিতে হবে।

এটা একটা চন্দন
কাঠের কেস।

এটা মিথ্যা অভিযোগ, স্যার।

আমি এই মামলা
লড়তে চাই না।

মিথ্যা অভিযোগ, স্যার।

আমি এই ধরনের মামলা
পরিচালনা করি না।

স্যার, আপনাকে অনুরোধ করছি।
- না বললাম তো।

আদালত সত্য নয়,
প্রমাণ চায়।

একটাই বিকল্প বাকি আছে।

তাকে তার অপরাধ
স্বীকার করতে বলুন।

আমি বিচারককে শাস্তি
কমাতে অনুরোধ করবো ।

কেমন আছো, বাবা?

ভালো আছি বললে,
সেটা আত্মপ্রতারণা হবে।

যদি বলি,
আমি ভালো নেই,

তা নিজেকে অপমান
করা হবে।

আমার কথা ভুলে যা।

তুই এখানে কেন এসেছিস?

বাবা, তুমি সব জানো।

তোমাকে কি প্রতিদিন মনে
করিয়ে দিতে হবে যে...

আমাদের অতিথিদের
ঘোল দেওয়া উচিত?

আমি নিয়ে আসছি।

কোনো অপরাধ না করেই কাটেরা
শাস্তির সম্মুখীন হচ্ছে।

কেউ তাকে
উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফাঁসিয়েছে।

সপ্তাহ ধরে,

আমরা সম্ভাব্য সব উপায়
চেষ্টা করেছি,

কিন্তু তাকে বার করে
আনতে পারছি না।

দয়া করে,

কিছু করো, বাবা।

আমি তোমাকে
অনুরোধ করছি।

তাকে ছাড়িয়ে আনো।

ওখানেই থামো।

জানো না, কোন জাতের সেবা
কোন গ্লাসে করা উচিত?

যখন কেউ ধাপে ধাপে,

অপদেবতার পূজা করে,

সে তার পবিত্রতা, শক্তি
এবং ভক্তি হারায়।

তুই আমাদের দূরে
সরিয়ে দিয়েছিস।

এখন সাহায্য চাইবার
সাহস হয় কিভাবে?

যেদিন থেকে তুই আমাদের
দূরে সরিয়ে দিয়েছিস,

সেদিন থেকেই তুই
আমার কাছে মৃত।

নমস্কার, স্যার।
- হ্যালো।

বামালসহ ধরা পড়ায়,

তার অপরাধের
স্বপক্ষে শক্তিশালী প্রমাণ আছে।

এখন, তোমাদের কাছে
একটাই বিকল্প রয়েছে।

আমরা কাটেরার উপর
নির্ভর করছিলাম।

কিন্তু কোনো অপরাধ না করেই
তাকে জেলে যেতে হয়েছে।

প্রভা এখন আদালতে
যাওয়া আসা করছে ।

আমাদের পরিবারগুলো
গৃহহীন হওয়ার আগেই

আমাদের একটি সুনির্দিষ্ট
সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

জমিদারের কাছে গিয়ে,

জমি লিজ নেওয়া যাক।

তার চাহিদানুযায়ী টাকা দিয়ে,
আমরা জমিতে কাজ শুরু করি।

না খেয়ে মরার চেয়ে
তা অনেক ভালো।

বুড়োটার দিকে দেখ!

সে একদম একা।

এই, বুড়ো!

এখানে তোর জীবন
দিতে এসেছিস?

বোকার মত কাজ করিস না।

কেটে পড়।

এত সাহস!

তারা একত্রিত হল কিভাবে?

পিছিয়ে যা! পালা।

তোমাকে ছাড়া হচ্ছে।

একজন স্বীকার করেছে
যে সে সেই চন্দন কাঠ চুরি করেছে,

এবং আত্মসমর্পণ করেছে।

সে কে, অফিসার?

এতদিন তারা আমাদের শোষণ
করতো। এখন হুমকি দিচ্ছে।

কারণ আমরা তাদের
প্রশ্রয় দিয়েছি।

একটি জাতির বৃদ্ধি
কৃষকের উপর নির্ভর করে।

ভক্তরা একই খাবার খায়।

সৈন্যরা একই খাবার খায়।

শ্রমিক শ্রেণী একই খাবার খায়।

আর সেই খাদ্য সরবরাহ
করেন কৃষকরা।

তোমাদের একটা কথা বলি।

খাদ্যকে দেবতা হিসেবে দেখা হয়।

কৃষকেরা সেই দেবতার
সৃষ্টি করেন।

ঐক্যবদ্ধ থাকলে,

আমরা পাহাড়কেও
কাঁপিয়ে দিতে পারি।

বাতাস আমাদের দূরে
উড়িয়ে দিতে পারবে না।

এসো, আমরা এখন থেকে
ঐক্যবদ্ধ থাকি।

শাসন করার জন্য
আমাদের কোনো রাজা নেই।

আমাদের সাথে যিনি আছেন,
তিনি হলেন...

এই ঘন সবুজ

প্রকৃতি মাতা।

আমরা তার সৈনিক।

এখন থেকে,

সবুজে আমরা নিঃশ্বাস নেবো।

সবুজ অঙরাখা পরবো।

আমাদের পতাকাও...

হবে সবুজ রঙের।

ভাবানুবাদ ও সম্পাদনা :
সুদীপ চক্রবর্তী।

তারা জমিদার প্রথাকে তাদের অধিকার হিসাবে বিবেচনা করে।

অধিকার হারানোর ভয়ে,

তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছে।

তার উপরে,

অফিসাররা, যাদের আমাদের সমর্থন
করার কথা ছিল,

আমাদের কষ্ট দিতে
তাদের সাথে হাত মিলিয়েছে।

আর কোন উপায় না পেয়ে,

আমরা আপনার কাছে এসেছি।

ম্যাডাম, দেখুন...

এটি সাম্প্রতিক আদেশ নয়।

এই আদেশটি ১৯৫১-৫২ সালে
পাস হয়েছিল।

এখন তা সংশোধন করে
পাস করানো হয়েছে।

এই আইন,

এই আইন,
কৃষকদের সুবিধার জন্য হয়েছে।

কোনো জমিদার কোনোভাবেই
আপনাদের ক্ষতি করতে পারবে না।

আগামীকাল থেকে, আপনার
তালুক অফিসে যাওয়ার দরকার নেই।

আগামী সপ্তাহ থেকে, আমাদের
অফিসাররা আপনার গ্রামে যাবেন।

আপনাদের প্রজাস্বত্বের
কাগজপত্র তাদের দেখাবেন।

তারা সেগুলো পরীক্ষা
করে দেখবেন।

এর পরে, আপনারা সরাসরি
স্বত্বের দলিল পাবেন।

চিন্তা করার কোনো দরকার নেই।

সবুজ বাহিনী জিন্দাবাদ।
কৃষক বাহিনী জিন্দাবাদ।

আমি,

নিজের চোখে এটা দেখেছি!

জেলা কালেক্টরের সামনে সে
আত্মবিশ্বাসের সাথে কথা বলেছে।

আইনের সমস্ত পয়েন্ট
উল্লেখ করেছে।

ডিসিকে সে চুপ করিয়ে দিয়েছিল।

অত্যন্ত সাহসের সাথে
সবকিছু সামলেছে!

নমস্কার, মালিক।

আমাদের মধ্যে বিরোধ আছে।

এতে যোগাযোগ হ্রাস পায়,

সম্মান নয়।

আপনি চিরকাল আমাদের মালিক
হয়েই থাকবেন।

আপনার প্রতি শ্রদ্ধা
কখনোই কমবে না।

প্রতিটি মেলা, উৎসব এবং অনুষ্ঠানে
আপনার উপস্থিতি একান্ত আবশ্যক।

আমরা আগামী সপ্তাহে বিয়ে করছি।

দয়া করে আমাদের বিয়েতে এসে
আমাদের আশীর্বাদ করবেন।

একই দিনে সরকারি কর্মকর্তারা
আমাদের জমির দলিল দিচ্ছেন।

গ্রামবাসী খুশি হবে, যদি আপনি
তাদের হাতে কাগজপত্র তুলে দেন।

দয়া করে আমাদের বিয়েতে
যোগ দেবেন।

কিছু লোক তাকে ম্যাডাম
বলে সম্বোধন করছিল।

এখন সে ম্যাডাম ইন্দ্রের মতো
আচরণ করতে শুরু করেছে!

তার অহঙ্কার দেখে আমি
সত্যিই হতবাক!

একদা দাস থাকা একজন,

এখন আমাদের
সম্মানের শিক্ষা দিচ্ছে!

উত্তর না দিলে,

তারা আমাদের প্রশ্ন
করতেই থাকবে, মালিক।

মালিক!

আমাদের একটা
কাজ আছে।

এই, কাটি?

কোথায় যাচ্ছিস?

এক মিনিটের মধ্যে ফিরে আসবো।

এখন কোথাও যাবি না।

কাটেরা, কোথায় যাচ্ছিস?

ভিতরে যা। এখনই।

কোথাও যাচ্ছি না।
এক মিনিটের মধ্যেই ফিরে আসবো।

আরে, কাটি?

আরে কাতেরা,

কোথায় যাচ্ছিস?
আজ তোর বিয়ে।

দিদা, কোথাও যাচ্ছি না।
এক মিনিটের মধ্যে ফিরে আসবো।

আমার কপাল!

একটা বিড়ি খাওয়ার জন্যেও আমাকে
তিন প্রজন্মের প্রশ্নের জবাব দিতে হয়!

নাম করতে না করতেই
শয়তান হাজির!

তুমি চতুর্থ প্রজন্ম।

প্রজন্ম বলতে কি
বোঝাতে চাইছো?

ভুলে যাও।

গালে একটা ঠোকর দাও।

সাগরে যাও, ঠোকর পাবে।

আগামীকাল এই নদী
সাগরে মিশতে যাচ্ছে।

তখন ঠোক্করের
বোমাবাজি হবে।

প্রেমিক হিসেবে আজ
আমাদের শেষ দিন।

কাল থেকে আমরা স্বামী-স্ত্রী।

আজকের চুমু হল ভালবাসা।

আগামীকালের চুমু হল কর্তব্য।

আমি আজই এটা চাই।

এই নাও, তোমার বিড়ি।

তুমি আমাকে বিড়ি আনতে বলেছিলে।
আমি শুধু বিড়ি এনেছি।

ভাতের সাথে তরকারি
পরিবেশন করা উচিত।

এর জন্য, তোমার
"খাবার পরিবেশন" বলা উচিৎ।

কি যে কষ্ট..

আরে রাঙ্গাপ্পা।

ঠিক সময়ে এসেছো।
একটা দেশলাই কাঠি দাও।

পুরানো ক্ষোভ মনে রেখো না।
আমার বিয়েতে যোগ দিও।

আমার স্ত্রী তোমার বাড়িতে আছে।
সন্ধ্যার আগে আসবো।

তুমি এটা অন্য কারোর
থেকে কিনেছো কেন?

আমরা তোমার জন্য একটা
তৈরি করে দিতাম।

সেরকম কিছু নয়, কাটেরা।

বিয়ের আয়োজনে ব্যস্ত ছিলে।

তাই ফসল কাটার জন্য একজনের
কাছ থেকে এটা কিনেছি।

এখন আসছি।

আরে, শালাবাবু,

ভিতরে আয়।

জামাইবাবু, এটা কি
ফসল কাটার মরসুম?

কিভাবে হবে?

এমনকি বীজ বপনের
মরসুমও শুরু হয়নি।

যাওয়া যাক।

ওদের হাতে ছুরি দিলে কেন?

তারা ফসল কাটার
জন্য নিয়ে গেছে।

সত্যি কথা বলো।

তারা উত্তরাঞ্চলীয়।

তারা কূপ খননকারী।

কিন্তু তাদের আসল পেশা,

টাকার জন্য মানুষ খুন করা।

টাকার জন্য এরা যেকোনো
কাউকে খুন করতে পারে।

তাদের বলা হয় 'লাল খুনি দানব'।

এর অর্থ 'রক্তপিপাসু দানব'।

এখানে তারা কি করতে এসেছে?

যাদের প্রজাস্বত্বের কাগজপত্র আছে, তাদের খুন করতে।

দেবরায় তাদের ভাড়া করেছেন।

কবে তারা তাদের পরিকল্পনা
বাস্তবায়িত করতে যাচ্ছে?

আজ রাতে।

জমিদার পাগল হয়ে গেছেন!

বহু বছর ধরে তার
ক্ষেতে কাজ করছি।

এখন তিনি আমাদের
মেরে ফেলতে চান।

চলো, সবাইকে সতর্ক করা যাক।

আমাদের হাতে
বেশি সময় নেই।

কি?

তারা একটি
কূপ খনন করেছে।

তার মানে, ওরা অনেক দিন
আগেই এখানে এসেছে।

এখন তারা আমাদের গ্রামের
সমস্ত প্রবেশপথ জানে।

একবার যদি তারা কূপ থেকে
বেরিয়ে আসে,

যে কোন জায়গায় যেকোনো
কাউকে হত্যা করতে পারে।

আমরা তা জানতেও
পারবো না।

তাদের কূপ থেকে বেরোতে
দিলে চলবে না।

তাদের সংখ্যা আঙুলে
গোনা যাবে না।

একটা বিশাল বাহিনী।

জামাইবাবু,

আমি কি কূপ থেকে জীবিত
বেরোতে পারবো?

বলতে পারি না।

কিন্তু আমাদের গ্রামের মানুষকে হত্যা
করার জন্য, যারা সেখানে আছে...

তারা জীবিত বেরিয়ে
আসতে পারবে না।

হাত তোলো।

ঘুরে দাঁড়াও।

মুখোশ খুলে ফেলো।

মুখোশ খোলো, এখনই।

তুমি!

তুমি এখানে কি করছো?

বলো,
না হলে গুলি করবো।

হ্যাঁ, সব বলবো।

আমি বলবো।

মালিক আমাদের আদেশ করেছেন
গোটা শহরে গণহত্যা চালাতে।

আমরা প্রস্থুত।

সেখানে বয়স্ক, মহিলা,
বা শিশু যেই থাকুক...

আমাদের তলোয়ার তাদের
রক্তের স্বাদ গ্রহণ করবে।

আমাদের আপনার
অনুমতি দিন।

আমরা তাঁর অনুমতি পেয়েছি।

জয় ভবানী।

জয় ভবানী।

কাটেরা!

মালিক আদেশ দিয়েছেন,

প্রতিটি মানুষের শিরশ্ছেদ করে
তাদের কূপের মধ্যে ফেলে দিতে।

তবে একটি বিশেষ মাথা
তার পায়ের কাছে পেশ করা উচিত।

সেই মাথা...

সেটা তোর।

যখন আমি তোমার কাছে পৌঁছাবো,
তুমি জানতে পারবে...

এটা আমি না অন্য কেউ।

আমি তোর থেকে
একশত পদক্ষেপ দূরে আছি।

এখানে তোর প্রতি পদক্ষেপের
জন্য একজন করে ব্যক্তি আছে।

একশত মানুষ তোর
অপেক্ষায় আছে।

তুমি শুধু আমাকেই দেখছো।

কিন্তু আমার দৃষ্টিকোণ থেকে,

তোমরা সবাই আমার হাতে
ধরা পড়েছো।

মোট ১০৮ জন পুরুষ
আছি এখানে।

সেটা কোনো ব্যাপার নয়।

আমার গ্রাম
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

মনে হয়, কেউ তোকে
আমাদের সম্পর্কে বলে নি।

এরপর থেকে, কেউ তোমাদের
কথা বলবেও না।

কারণ,

তোমার অস্তিত্ব থাকবে না।

দেবীর উদ্দেশ্যে বলি হবার
জন্য প্রস্তুত হও।

আমার বাবা শপথ নিয়েছিলেন,

যদি ছেলে হয়, তিনি
দেবী কাটরাভাকে পশু বলি দেবেন।

তিনি মারা যাওয়ার পর,

সেই প্রস্তাব অপূর্ণ থেকে যায়।

আজ, আমি সেই প্রতিশ্রুতি
পূর্ন করতে যাচ্ছি।

কিন্তু এটা হবে,

নরবলি।

যা, তার মাথা কেটে
নিয়ে আয়।

চল, কাজটা করা যাক।

একবার যদি তারা কূপ থেকে
বেরিয়ে আসে,

তারা যে কোন জায়গায় যেকোনো
কাউকে হত্যা করতে পারে।

আমরা জানতেও পারবো না।

তাকে টুকরো টুকরো
করে ফেল।

আক্রমণ কর!

শেষ করে দে।

হে দেবী,

মানুষকে হত্যা

অবশ্যই পাপ।

কিন্তু,

আমি দানবদের হত্যা করেছি,
যারা মানুষকে হত্যা করে।

এটা যদি পাপ হয়,

দয়া করে আমাকে ক্ষমা করুন।

দয়া করে,

আমাদের গ্রামকে রক্ষা করুন।

কি হয়েছে?

বিয়েতে যোগ দিতে
এসেছে সবাই!

সবার নজর এড়িয়ে
কিভাবে ভিতরে ঢুকবো?

ঠিক বলেছিস।

মুখ ঢেকে রাখ।

কাটেরা!

কাটি ! কাটি ! কাটি !

কোথায় ছিলিস তুই?

ওর দিকে তাকা!

অন্ধকারের মধ্যে এই দেবীকে কেউ
ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে!

যা চাও, তাই নাও দিদি।

তোমার কাছে থালি আছে?

কাটি !

ভাবানুবাদ ও সম্পাদনা :
সুদীপ চক্রবর্তী।

উৎপাদিত পণ্যের কোনো মূল্য নেই।

নিয়মবিধির কোনো মূল্য নেই।

আইনের কোন মূল্য নেই।

নিষ্পাপ আত্মার,

কোন মূল্য আছে কি?

যে অন্যের জীবনের মূল্য দেয় না,

তার বেঁচে থাকা উচিৎ নয়।

শহরের মানুষের ন্যায়বিচার পাওয়ার
কারণে আমার কি খুশি হওয়া উচিৎ?

নাকি প্রভার জন্য দুঃখিত হওয়া উচিৎ?

নাকি সেই রাক্ষস দেবরায়ের মৃত্যুর
জন্য উদযাপন করা উচিৎ!

মানুষ দুঃসময়ে পালিয়ে যায়।

কিন্তু তুমি তোমার
গ্রামের জন্য লড়েছো।

তোমাকে অভিবাদন জানানো
যথেষ্ট নয়।

তোমাকে পূজা করা উচিত!

তুমি দেবতা কাটেরাপ্পা।

এখন পর্যন্ত বেতনের জন্য
কাজ করেছি।

তোমাকে দেখার পর,
আমি সমাজের জন্য কাজ করতে চাই।

চলো, যাওয়া যাক।

দেখি, মেলায় যোগদান করা
থেকে কে আটকায়?।

চলো, যাই।

তুমি এই সব
কিভাবে জানলে?

আপনি 107টি কঙ্কাল পেয়েছেন।

তবে উত্তর দিক থেকে
আসা দলটিতে...

১০৮ জন সদস্য ছিল, ম্যাডাম।

তুমি এখনো অত্যন্ত ছোটো,

তোমার দীর্ঘজীবী হওয়া উচিৎ।

আমাদের পুরুষদের চোখে
আমি নিষ্ঠুরতা দেখতে অভ্যস্ত ছিলাম।

কিন্তু কাতারের চোখে,

ভালোবাসা ছিল, যা আমার মত
একজন জানোয়ারকে বদলে দিয়েছিল।

আমার গ্রামবাসীদের
ভবিষ্যৎ দেখেছিলাম আমি।

হত্যার অপরাধে, কারাগারের পিছনে আমার জীবন শেষ হওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু তিনি আমাকে
শিক্ষার পথ দেখিয়েছিলেন।

আমার হত্যার যন্ত্রে পরিণত
হওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু আমি পুলিশ হয়ে
আইনরক্ষার কাজ করছি।।

আমার জীবন তার কাছে ঋণী।

ম্যাডাম,

আপনি যদি এই রিপোর্টে...

স্বাভাবিক মৃত্যর কথা
উল্লেখ করেন,

কারাগারের আড়াল হতে
আমার ঈশ্বর...

একদিন নিশ্চয়ই মুক্তি পাবে।

নয়তো,

তাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হবে!

আমি আপনাকে অনুরোধ
করছি, ম্যাডাম।

আমার ঈশ্বরের জীবন
এখন আপনার হাতে।

আপনার হাতে।

রিপোর্টটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু
হিসাবেই পেশ করছি।

ভীমনহল্লিতে ঘটা একটা
পূরানো ঘটনার সাথে সম্পর্কিত...

আপনি কিছু বিবরণ চেয়েছিলেন।

দরকার নেই।

আমি যা জানতে চেয়েছিলাম,
তা জানতে পেরেছি।

আপনাকে বলেছিলাম, ম্যাডাম...

যে এটা স্বাভাবিক মৃত্যু।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

শালাবাবু!

দেবরায় আর নেই।

আর তুই এখানে ছিলিস না।

কালীগৌড়া আমাদের গ্রামকে
জীবন্ত নরক বানিয়ে দিয়েছে!

হ্যাঁ, কাটেরা।

আমাদের জমি অনুর্বর হয়ে গেছে।

পুকুর ও হ্রদ শুকিয়ে গেছে।

পুরো গ্রাম এখন ভূতের আস্তানায়
পরিণত হয়েছে!

মহাদেবের হাতে যেমন
ত্রিশূল আছে,

ভগবান বিষ্ণুর হাতে
চক্র আছে,

আমাদের কাটেরার হাতে,

ওলে মারি লাগাতে হবে।

ওলে মারির নিজস্ব
ওজন আছে!

আর আপনার নিজের তা
আছে, কাটেরা।

একমাত্র আপনিই সেটা
বাড়িতে আনতে পারেন।

হ্যাঁ! শুধুমাত্র আপনি এটি
বাড়িতে আনতে পারেন।

আমাদের আশীর্বাদ করুন!

জঙ্গল থেকে যাতে হাতী বেরিয়ে
আসতে না পারে, তাই খাদ খুঁড়লাম।

কিন্তু এটা বেরিয়ে এসেছে।

কৃষি জমিতে এর প্রবেশ করা
আটকাতে দেওয়াল তুললাম।

দেওয়াল ভেঙে ফেলেছে।

এখন ওলে মারি নিতে
গ্রামে ঢুকছে।

নিয়ে যাবার কথা ভুলেই যান,

সে স্পর্শও করতে পারবে না।

তার এটা স্পর্শ করা উচিৎ।

তার এক হাত মহিষের রক্ত
স্পর্শ করবে,

তোমরা ১৫০জন
তার রক্ত বার করবে।

তাই হবে!

বলির মহিষ নিয়ে এসো।

কাটেরা।

নিজেকে দেখো এখন!

কারাজীবন কেমন কাটালে?

তোমাকে সমবেদনা জানাই।

বুড়ো হয়ে গেছো।

দেবীর কাছে আশীর্বাদ
চাইতে যাও।

আমাদের খাবার পরে,

তুমি এক কোণায়
গিয়ে বসো,

গ্লুটেন মুক্ত খাবার খাও,

এবং এখান থেকে কেটে পড়ো।

বার্ধক্য শরীরের উপর
প্রভাব ফেলে।

আত্মার উপর নয়।

চিরন্তন আত্মা

সবকিছু গ্রাস করতে পারে।

খাওয়ার সময় যদি
দম বন্ধ হয়ে আসে,

অথবা যদি আমার হাতে
ধরা পড়েন,

আমি শুধু রক্ত পান করি।

শানভোগবাবু, দেবীর অলঙ্কার
নিয়ে আসুন।

কেমন আছো?

একইরকম।

তুমি পরিবর্তিত হয়েছো।

পরিবর্তন অনিবার্য।

হ্যাঁ, সত্যিই।

কিন্তু,

এতটাও নয়।

পাদ্দু?

মা?

মা?

মা কোথায়, পাদ্দু?

পাদ্দু?

তুই কি আহত?

ব্যথা অনুভব করছিস?

আমাদের যে যন্ত্রনা
তুই দিয়েছিস,

তা এর চেয়েও
বেদনাদায়ক, দিদি।

তুই আমাদের পরিবার
ও বংশের উপর ছুরিকাঘাত করেছিস!

আমাদের দূরে সরিয়ে দিয়ে,

সারা জীবনের জন্য
অপমান করেছিস।

আগামীকাল আমার বিয়ে।

আমি কোনো ভুল
করিনি, পাদ্দু।

২২ বছর বয়সেই
তুই মারা যাচ্ছিস।

কিন্তু যে পরিবার তোকে ভালবাসা
এবং যত্ন দিয়ে লালনপালন করেছে,

তার সুনাম
হাজার বছরের পুরানো।

আমি কোনোভাবেই
তোকে বিরক্ত করবো না।

দয়া করে আমাকে বাঁচতে দে।

তোর কাছে ভিক্ষা চাইছি,

আমি তার সাথে বাঁচতে চাই।

যদি তুই মজা লুঠতে চাইতিস,

আমাদের নিজস্ব বর্ণের কারো সাথে
তোকে জুড়ে যেতে দিতাম।

কিন্তু!

সেই কুকুরটার প্রতি
তোর লালসা ছিল!

আমাদের পিতামাতার খ্যাতি

এমনি নষ্ট হয় নি,

তুই সেটা খারাপ করেছিস।

তাই তোকে মারতে
আমি এখানে নিয়ে এসেছি।

পাদ্দু! পাদ্দু!

আমাকে ছেড়ে যাস না!

আগামীকাল আমার বিয়ে।

আমি বাঁচতে চাই।

আমাকে মরতে দিস না।

কাটি !

কাটি !

হ্যাঁ,

আমিই প্রভাকে মেরেছি।

ভালোবাসার চাইতে

জাত আমাদের কাছে
বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

পরিবারের মেয়ে মারা গেলে,
আমরা নিজেদের সান্ত্বনা দিতে পারি!

কিন্তু যখন সে তোমার মত কারোর সাথে
পালিয়ে যায়, সেটা মেনে নিতে পারি না।

সে আমার দিদি ছিল।

পরিবারের একজন সদস্য মাত্র।

কিন্তু জাত!

আমাদের জাত আমাদের জীবিকা, ক্ষমতা, ঈশ্বর এবং সবকিছু।

এজন্যই আমরা উর্ধ্বতন।

যদি সে আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে
তার সতীত্ব হারিয়ে ফেলতো,

আমি তাকে ক্ষমা করে দিতাম।

কিন্তু তোমাকে বিয়ে করে সে আমাদের
বর্ণের পবিত্রতা নষ্ট করেছিল।

কোন ভাবেই তাকে ক্ষমা
করতে পারতাম না।

এমনকি, আমার দশটা
বোন থাকলেও,

তারা যদি এমন
নোংরা পাপ করতো,

তাকে যেমনভাবে হত্যা করেছি,

ঠিক তেমনভাবেই, আমি তাদের
প্রত্যেককে মেরে ফেলতাম।

লোহার জিনিস বানানো যার পেশা,
তাকে কামার বলা হত।

কাপড় পরিস্কার করা যার পেশা,
তাকে ধোপা বলা হত।

চারণ করা যার পেশা,
তাকে মেষপালক বলা হত।

বুনন করেন যিনি,
তাকে তাঁতি বলা হত।

যে চাষ করলো,
সে হয়ে গেল কৃষক।

জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে,

ব্রাহ্মণত্বের শিরোপা পেলো।

পেশা চিহ্নিত করার জন্য
যে আলো জ্বালানো হয়েছিল,

তাকে জাত বলা হতো।

কিন্তু,

তার মত দুষ্ট মানুষ,

সেই আগুনকে ব্যবহার করেছে মানবতাকে পুড়িয়ে ফেলার জন্য।

সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি হল,

মানব জাতি।

সবচেয়ে বড় সম্মান হল,

আত্মসম্মান।

প্রভাকে হত্যা করার জন্য,

সে কেবল জাতের
দোহাই দিয়েছে।

কিন্তু, প্রভা

এর বাইরে বেড়ে উঠেছিল।

তার মধ্যে সমতা জ্ঞান ছিল।

তার অক্ষরজ্ঞান ছিল।

তার উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছিল।

তার মনোভাব ছিল নিঃস্বার্থ।

সেই দেবীর পূজা করার বদলে,

আপনারা তাকে হত্যা করেছেন!

ঈশ্বরকে কেউ অনুরোধ করে না

তাদের একটি নির্দিষ্ট জাতিতে
জন্ম দেবার জন্য।

প্রতিটি শিশু ঈশ্বরের সমান।

সেই দেবতাকে জাত দিয়ে
সীমাবদ্ধ করবেন না।

তাদের মানবতা দিয়ে
চিহ্নিত করুন।

প্রেম, সমতা এবং সহানুভূতি
দিয়ে চিহ্নিত করুন।

একমাত্র তখনই তোমরা সবাই
মিলেমিশে থাকতে পারবে,

এবং গ্রামও সমৃদ্ধ হবে।

এই ওলে মারি ঘৃণা ও ক্ষোভ
তৈরি করেছে।

এখানে এবং এখনই
এর অবসান ঘটানো উচিৎ।

ভাবানুবাদ ও সম্পাদনা :
সুদীপ চক্রবর্তী।
সাবটাইটেল ভালো লাগলে অবশ্যই
রেটিং ও ফিডব্যাক দেবেন।